সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন ডাকসুর ভিপি ও কোটা আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর।
দুপুর ১২ টায় রাজু ভাস্কর্য থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বুয়েট অভিমুখে যান শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা মেধাবী ছাত্র ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।
এদিকে ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে সকাল থেকে বুয়েট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন।
রোববার দিনগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শের-ই বাংলা হলের নিচতলা থেকে ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরিবার ও সহপাঠীদের অভিযোগ, ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত ফাহাদের সহপাঠীরা বলছেন, রাত ৮টার দিকে শের-ই বাংলা হলের এক হাজার ১১ নম্বর কক্ষ থেকে কয়েকজন ফাহাদকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর রাত ২টা পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তাদের ধারণা, ২ হাজার ১১ নম্বর রুমে নিয়ে তাকে পেটানো হয়। পরে শেরেবাংলা হলের একতলা ও দুই তলার মাঝখানের সিঁড়ি থেকে ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ফাহাদের এক সহপাঠী বলেন, যারা ফাহাদকে ডেকে নিয়ে যায় তাদের আমরা চিনি। কিন্তু এ মুহূর্তে তাদের নাম বলতে চাচ্ছি না।
তবে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে, এ বিষয়ে এখনও কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ। এদিকে এ বিষয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষও এখনও কিছু বলেনি।
এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল ও সহসভাপতি ফুয়াদকে আটক করেছ পুলিশ।
চকবাজার থানার ওসি সোহরাব হোসেন জানান, বুয়েট শিক্ষার্থী ফাহাদের মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাসেল ও ফুয়াদকে আটক করা হয়েছে। তারা দুজনই বুয়েট শিক্ষার্থী। বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ বলছে, ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। শরীরের পেছনে, বাম হাতে ও কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত আঘাতের কালো দাগ ছিল।
ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের লেভেল-২ এর টার্ম ১-এর ছাত্র ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে।
ফাহাদের মামাতো ভাই জহিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ফাহাদের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা ছিল না। সে কুষ্টিয়ায় গিয়েছিল। গতকালকেই বিকালে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় এসে হলে ওঠে। তার পর মধ্যরাতে খবর পাই ভাই মারা গেছে।
হল প্রভোস্ট মো. জাফর ইকবাল খান বলেন, রাত পৌনে ৩টার দিকে খবর পাই এক শিক্ষার্থী হলের সামনে পড়ে আছে। কেন সে বাইরে গিয়েছিল, কী হয়েছিল, তা এখনও জানা যায়নি।
‘পরে বুয়েটের চিকিৎসক দিয়ে তাকে পরীক্ষা করা হয়। ওই চিকিৎসক জানান তিনি বেঁচে নেই। পরে পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ এসে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
চকবাজার থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাত পৌনে ৩টার দিকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ আমাদের ফোন করে বিষয়টি জানায়। পরে আমরা গিয়ে শেরেবাংলা হলের বাইরে নিচতলা থেকে লাশ উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে আসি।
ফাহাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে উল্লেখ করে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, আঘাত কোনো অস্ত্রের নয়। কোনো কিছু দিয়ে বাড়ি দেয়া হয়েছে। কেন এত রাতে সে বাইরে গিয়েছিল, তা কেউ বলতে পারেনি।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় সহপাঠীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত হবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।