বিশ দিনেও ফিরতে পারেনি ভারতে আটক বাংলাদেশি ২০ রাখাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
দালালের খপ্পরে পড়ে ২০ দিনেও ফিরে আসতে পারেনি ভারতে আটক ২০ জন বাংলাদেশি গরুর রাখাল। ফলে বাংলাদেশে ফিরে না আসায় রাখালদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের মাসুদপুর ও শিংনগর সীমান্তে।

এলাকাবাসী ও রাখালদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ আগস্ট রাতে উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের সাহাপাড়া নুরেশ মোড় গ্রামের আলহাজ্ব আয়েশ উদ্দিনের ছেলে অবৈধভাবে ভারতে গরুর রাখাল পাঠানোর দালাল জোবু আলী (৫৫) ও তার ভাই রবিউল ইসলাম রবুর মাধ্যমে ভারত থেকে গরু আনার জন্য মাসুদপুর ও শিংনগর সীমান্তে চোরাই পথে ভারতে পাঠায় মনাকষা ও দূর্লভপুর ইউনিয়নের ২০ জন রাখাল।

তাদের আত্মীয়রা জানান, রাখালরা ভারতে পৌঁছানো মাত্র জোবু ও রবিউল দালালের নিকট পাওনা টাকার জের ধরে ভারতের কালিয়াচক গ্রামের লালচাঁন আলী নামে এক ব্যক্তি তাদেরকে আটকে রেখে নির্যাতন চালায়।

আটকে থাকা নির্যাতনের শিকার রাখালরা হলো, দুর্লভপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের এনামুলের ছেলে সোনু (২৫), ইদুলের ছেলে লিটন (১৯), মোখলেশের ছেলে ডালিশ (২০), তোবুর ছেলে বাবু (২০), মোশারফের ছেলে শাকিব (২০), সফিকের ছেলে বাক্কার (২০), শুকুদ্দির ছেলে উজির (২০), ভিক্ষুর ছেলে মানিক (২৩), কুবলের ছেলে মেজের (২০), হবুর ছেলে অসিম (২০), জগনাথপুর গ্রামের কাইউমের ছেলে রাসেল (২০) সহ মনাকষা ইউনিয়নের গোপালপুর, তারাপুর ও সাহাপাড়া ও ঠুঠাপাড়া গ্রামের আরো প্রায় ৯ জন।

এ ব্যাপারে দালাল রবিউল ইসলাম রবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিল্কসিটি নিউজকে জানান, আমার ভাতিজা জোবুর ছেলে বাবলু গরুর ব্যবসা করার সুবাধে তার মাধ্যমে তাদেরকে পাসপোর্ট ছাড়াই চোরাই পথে ভারতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, ভারতে লালচাঁন সাহাপাড়া গ্রামের হাবিল মেম্বারের নিকট ভারতীয় ২২ লাখ ভারতীয় রূপী পাওনা থাকায় উক্ত টাকা আদায়ের জন্য লালচাঁন ওই ২০ জন রাখালকে আটকে রেখেছে। এদিকে হাবিল মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, লালচাঁন আমার নিকট কোন টাকা পাবে না।

সূত্র জানায়, রবু ও জোবু দীর্ঘদিন যাবত এভাবেই পাসপোর্ট ছাড়াই ভারতে গরুর রাখাল পাঠায়, বিনিময়ে তারা রাখালদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। তারা দুইভাই এভাবে কোটি টাকার মালিক হয়েছে। রাজশাহী নগরী ও নিজ গ্রামে রাজকীয় বাড়ি নির্মাণ করেছেন। শুধু তাই নয়, কিনেছে শতাধিক বিঘা জমি।

এ ব্যাপারে মনোহরপুর বিওপির কমাণ্ডার জানান, যদি দেশের বাইরে পাসপোর্ট ছাড়াই কোন লোক পাঠানো হয় সেটা সর্ম্পুন অবৈধ।

এদিকে শিবগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম হাবিব জানান, যার মাধ্যমে পাঠানো হোক না কেন পাসপোর্ট ছাড়াই স্বদেশ ত্যাগ করা সর্ম্পুন অবৈধ। তবে পাসপোর্ট আইনে মামলা করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত এভাবে কয়েকটি সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভারতে লোক পাঠানো হয়।
স/শ