বিশ্বকাপের আগে দুর্দান্ত সাকিব টিম টাইগারের অনুপ্রেরণা

আইপিএলে আশা বাঁচিয়ে রাখতে এলিমিনেটর ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর (আরসিবি) বিপক্ষে সাকিব আল হাসানের পারফরমেন্স গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সাকিবের পারফরমেন্স বাংলাদেশের জন্যও স্বস্তির বটে। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি ভিন্ন শহরে বাংলাদেশ যখন অনুশীলন করছিল, তখন কেকেআরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলছিলেন সাকিব।অন্তত এতটুকু নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এটা শুধু তারই আত্মবিশ্বাস বাড়াবে না; একই সাথে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে বিশ্বকাপের আগে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

ম্যাচে চার ওভার বল করে ২৪ রান দেন সাকিব। ছিলেন উইকেটশুন্য। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৯ রান করেন তিনি। এমন পারফরমেন্স আহামরি না হলেও, স্বাভাবিক অর্থে প্রশংসনীয়, কারন হাই-প্রোফাইল লো-স্কোরিং ম্যাচে তার পারফরমেন্স ম্যাচে প্রভাব ফেলেছে।সাকিব রান কম দিলেও, ম্যাচে ভূমিকা রাখেন সুনীল নারাইন। ২১ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। এরমধ্যে বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মত গুরুত্বপূর্ণ উইকেট ছিল। পরে ১৩৯ রানের টার্গেটে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন নারাইন। ১৫ বলে ২৬ রান করেন তিনি।

নারাইনের বিদায়ের পর কারও দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচটি শেষ করার দরকার ছিল। কিন্তু ব্যাঙ্গালুরুর বোলিংয়ের বিপক্ষে সেটি কেউ করতে পারছিল না। তা সত্ত্বেও, শেষ ওভারের যখন সাত রান দরকার ছিল, তখন ওই ওভারের প্রথম বলে দুর্দান্ত স্কুপ ছিল সাকিবের। সাকিবের স্কুপ সীমানা পার করে এবং খেলার রঙ পুরোপুরি বদলে দেয়। যদি প্রথম বলে বাউন্ডারি না আদায় করতেন সাকিব, তবে ম্যাচ জয়ের সুযোগ ছিল ব্যাঙ্গলুরুর। কিন্তু স্কুপটি সাকিবের দারুন মানসিকতার প্রমাণ করে। তাই নারাইনের সাথে সাকিবের প্রশংসা করেছিলেন কোহলি।

সাকিবের এই অবদান বাংলাদেশের জন্য বিশাল। কারণ তিনি ফর্মে ছিলেন না। এতে চিন্তায় ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। অফ-ফর্মের কারণে সাকিবকে বেশ কিছু ম্যাচে একাদশের বাইরে রেখেছে কেকেআর। শুধুমাত্র আন্দ্রে রাসেলের ইনজুরিই তাকে দলে ফিরিয়ে এনেছিল এবং এখন সে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তার পারফরমেন্স দলের আইপিএলের ফাইনাল আশা বাঁচিয়ে রাখে। আইপিএল খেলার জন্য সাকিবের অনাপত্তিপত্র ছিল ৯ অক্টোবর পর্যন্ত। ১০ অক্টোবর দলের সাথে তার যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেকেআর প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাওয়ায়, দলের সাথে থাকতে অনাপত্তিপত্র বাড়ানোর সিদ্বান্ত নেন তিনি।

অনেকেই এ বিষয়টির সমালোচনা করেন, তবে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, তার প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে খেলা ও দলের জয়ে অবদান রাখার সিদ্বান্ত টি-টোয়েন্টি কাপে বাংলাদেশকে উপকৃত করবে। কেকেআরের অফিসিয়ার ওয়েবসাইটে সাকিব বলেন, ‘সুনীল গতকাল ব্যাটিং এবং বোলিং উভয় বিভাগেই দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে। গতকাল ছিল সম্পূর্ণভাবে তার দিন। আমি খুশি যে তার পারফরমেন্সে আমাদের দল জিতেছে।’

এমন পারফরমেন্স তার উপর চাপ সৃষ্টি করেছে কি-না জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘সব সময় চাপ থাকে। কিন্তু পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে আমাদের এটির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আমি দীর্ঘদিন ধরে খেলছি এবং জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করছি। এই ধরনের চাপ সামাল দেয়ার ক্ষমতা আমার আছে।’

আগামীতাল দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে দিল্লির মুখোমুখি হবে কোলকাতা। ওই ম্যাচ নিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমরা সেটাই করব যা আমরা এতদিন ধরে অনুসরণ করে আসছি। আবুধাবি বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসার পর থেকে আমাদের নক-আউট মনোভাব ছিল এবং আমরা একে একে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। আমাদের দলের জন্য এখন ভালো দিক হচ্ছে কোনো দলই আমাদের হালকাভাবে নিবে না।’

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ