বিশ্বকাপও হাতছাড়া হচ্ছে ভারতের!

করোনা ঘাড়ে চাপার পর বোধদয় হলো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ওই আইপিএল কর্তৃপক্ষের।

বায়ো বাবল সুরক্ষার মধ্যেও যখন করোনার হানা থেকে রেহাই পেল না আইপিএলে অংশ নেওয়া ক্রিকেটাররা, তখন স্থগিত করতে হলো টুর্নামেন্ট।

স্থগিতের আগেই করোনাভীতিতে বেশ কয়েকজন বিদেশি তারকা ভারত ছেড়েছেন। করোনায় মৃতের চিতার আগুনের ধোঁয়ায় যখন দিল্লি, চেন্নাইয়ের আকাশ অন্ধকারাচ্ছন্ন, তখন বায়ো বাবলে ভরসা করেই চলছিল আইপিএল।

কিন্তু বায়ো-বাবল পরিবেশই সবচেয়ে নিরাপদ দাবি এর টেকল না বিসিসিআইয়ের। করোনার থাবায় টুর্নামেন্ট তো স্থগিত হলোই, এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম।

আইপিএল স্থগিত হওয়ার পরই আলোচনায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ভারতের মাটিতে আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পড়ে গেছে পুরোপুরি অনিশ্চয়তায়।

স্বাস্থ্য বিশ্লেষক, ক্রিকেট বিশ্লেষক এবং সাবেক তারকারা প্রশ্ন তুলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে অক্টোবরে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে ভারতের আঙিনায়। অথচ দ্বিতীয় ঢেউয়ের লণ্ডভণ্ড সব। তৃতীয় ঢেউ সামাল দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। ওই সময় ১৬ দেশের ক্রিকেটার ও স্টাফদের নিয়ে ভারতের মাটিতে বৈশ্বিক এই আয়োজন করা যাবে কি?

বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি কি রাজি হবে তাতে?

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ভারতের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে পারে আইসিসি। বিষয়টি বিসিসিআইকে জানিয়েও দিয়েছে আইসিসি।

এ নিয়ে বিসিসিআইয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেয়ার পক্ষপাতী অনেকেই। সেটাই যদি হয়, তাহলে করোনার জন্য টি-টোয়েক্টি বিশ্বকাপও হচ্ছে না ভারতের মাটিতে।

তবে এখনও হাল ছাড়তে রাজি নন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী। সংবাদমাধ্যমকে সৌরভ বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে আরও কিছুটা সময় রয়েছে। আমরা করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। আগামীদিনে পরিস্থিতির বিচার করে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

তবে ভেতরের খবর অন্যরকম। এমন পরিস্থিতি বিশ্বকাপ আয়োজনের চিন্তাও করতে পারছে না বিসিসিআই।

পিটিআইকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিসিসিআই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতের ৭০ বছরের ইতিহাসে স্বাস্থ্যের এমন অবস্থা হয়নি। শুরু হওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে আইপিএল স্থগিত করে দেওয়া প্রমাণ করে বড় মাপের প্রতিযোগিতা আয়োজন করার মতো দেশের অবস্থা নেই। আর নভেম্বরে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ দেখা দিতে পারে দেশে। সেই সময় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করা অসম্ভব।’

তাহলে ভেন্যু বদলে কোথায় নেওয়া হতে পারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ?

ওই কর্মকর্তা জানালেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতই হবে উৎকৃষ্ট ভেন্যু। সেখানে আইপিএল আয়োজনের অভিজ্ঞতা রয়েছে ভারতের। করোনার সংক্রমণও নেই তেমন।