বিমান ও স্থলবন্দরে বসছে ৫০ ই-গেট

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

মাত্র ১৫ সেকেন্ডে বিমানবন্দর বা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সুযোগ আসছে বাংলাদেশেও। দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও দুটি স্থলবন্দরে স্থাপন করা হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বা ই-গেট। এসব বন্দরে ৫০টি ই-গেট স্থাপন হবে, যাতে ইলেকট্রনিক পাসপোর্টধারীরা সহজেই ইমিগ্রেশন পার হতে পারবেন।

আগামী ১ জুলাই থেকে দেশের নাগরিকদের ই-পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে সব কাজ শেষ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। ই-পাসপোর্টের ডাটা থাকবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ডাটা বেইসেও।

এ উদ্যোগ ২০১৭ সালে নেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কয়েক দফা পেছানোর পর আগামী ১ জুলাই থেকে নাগরিকদের ই-পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য কাজ চলছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। জার্মানির সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে অনেক আগেই।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ৩১ মার্চ মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বেনাপোল ও বাংলাবান্দা স্থলবন্দরে ৫০টি ই-গেট স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জার্মানির প্রতিষ্ঠান থেকে ই-গেট আনা হচ্ছে। শিগগিরই এগুলো দেশে পৌঁছবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বলেন, ‘ইতিমধ্যে ই-গেট জার্মানি থেকে দেশে আসার পথে রয়েছে। আসার পরপরই পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপন করা হবে।’

সূত্র জানায়, ৫০টি ই-গেটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বসানো হবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ভিআইপি, ভিভিআইপি যাত্রী ছাড়াও শুধু ২৪টি গেট সাধারণ যাত্রীদের ব্যবহারের জন্যই বসানো হতে পারে।

যেভাবে কাজ করবে ই-গেট : প্রকল্প পরিচালক সাইদুর রহমান খান বলেন, ই-পাসপোর্ট নিয়ে যখন একজন ব্যক্তি ই-গেটের কাছে যাবেন তখন একটি নির্দিষ্ট স্থানে ই-পাসপোর্টটি রাখলে সঙ্গে সঙ্গে গেট খুলে যাবে। নির্দিষ্ট নিয়মে গেটের নিচে দাঁড়ানোর পর ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। এরপর সব ঠিকঠাক থাকলে ১২-১৫ সেকেন্ডের মধ্যেই যাত্রী ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন। তবে কেউ যদি ভুল করেন তা হলে লাল বাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সঠিকভাবে ই-পাসপোর্ট ব্যবহারে সহযোগিতা করবেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি নিয়ে ইমিগ্রেশন পার হতে গেলে ১০-১৫ মিনিট বা কখনো আরো বেশি সময়ও লেগে যায়। যে কারণে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কিন্তু ই-পাসপোর্ট থাকলে কয়েক সেকেন্ডে পার হওয়া সম্ভব হবে বলে এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, শুরুর দিকে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার ই-পাসপোর্ট প্রিন্ট করার চিন্তা নিয়ে এগোনো হচ্ছে। বিষয়টি নতুন হওয়ায় ধীরে ধীরে এ সংখ্যা বাড়ানো হবে। বর্তমানে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার পাসপোর্টের চাহিদা রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে। বর্তমানে বই আকারে যে পাসপোর্ট আছে, ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে বর্তমানে পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, ই-পাসপোর্টে তা থাকবে না। সেখানে থাকবে পলিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডের মধ্যে থাকবে একটি চিপ। সেই চিপে পাসপোর্টের বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। ই-গেটে চিপটি ব্যবহার করে দ্রুত ইমিগ্রেশন পার হওয়া যাবে।