সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
শীত বলে কিছু নেই। গত এক দশকে রাজ্যে শীতের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে প্রচুর। এই বছরেও যথারীতি শীত নিয়ে মানুষের মনে হাজারো প্রশ্ন রয়েছে। এসবের হাজারো প্রশ্নের মাঝেই আলিপুরের আবহবিদরা জানাচ্ছেন শীত বলে কিছু নেই। তাহলে কি আছে? আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে আছে ‘জাঁকিয়ে শীত’। যা পড়তে এখনও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে রাজ্যকে।
বর্ষা এসে গিয়েছে রাজ্যে। এর ঘোষণা হয় আবহাওয়া দফতরের তরফে। কিন্তু শীত এসে গিয়েছে রাজ্যে বা ভারতে এমন কোনও ঘোষণা করে না মৌসম ভবন বা কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আবহবিদদের দাবি শীত এসে গিয়েছে এমন ঘোষণা করা যায় না, কারণ শীত সব জায়গায় পড়ে না। কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গায় শীত অনুভূত হয়। সেখানেই পড়ে জাঁকিয়ে শীত। বাকিটা শীতের আমেজ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশ কুমার দাস বলেন, “মুম্বই বা দেশের দক্ষিণের দিকে শীতের আবহ বা সিস্টেম তৈরি হয় না।” এই আবহ তৈরি হয় শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায়। তাই নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গার জন্য আর শীতের আগমনের ঘোষণা করা হয় না। তিনি আরও জানিয়েছেন, “ জম্মু কাশ্মীরে যেখানে চার মাস ধরে ঠাণ্ডা অনুভূত হয় সেখানে এই রাজ্যে ২ মাস। নির্দিষ্ট কোনও স্থায়িত্বকাল নেই। স্থান অনুযায়ী এটা পরিবর্তন হয়ে যায়।” আবহবিদ আরও জানিয়েছেন, “ যেখানে যেখানে এই সিস্টেম কাজ করে সেখানে জাঁকিয়ে শীত পড়ে বাকি যেটা অনুভূত হয় সেটা শীতের আমেজ মাত্র।”
বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পর থেকে ক্রমাগত নেমেছে কলকাতা সহ সমগ্র রাজ্যের তাপমাত্রা। কুড়ি থেকে নামতে নামতে পারদ এসে ঠেকেছে ১৫-তে। কিছু কিছু স্থানে তাপমাত্রা ১১-ও ছুঁয়েছে। নিয়ম নীতি মেনে আবহাওয়া দফতর বলছে শীত এখনও আসেনি। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য শীত এসে গিয়েছে এমন কথা জানানো হয় না। এটা শীতের আমেজ। তবে শীতের আমেজ ও জাঁকিয়ে শীতের উষ্ণতার তারতম্যটা তাহলে কেমন হয়?
আবহবিদরা জানিয়েছেন, “যে তাপমাত্রা দেখে সাধারনের মনে হয় শীতের আগমন হয়ে গিয়েছে সেই তাপমাত্রাটা আদতে আবহবিদদের গুরুত্বের মধ্যেই পড়ে না। কারণ, ১৪ ডিগ্রি বা ১৫ ডিগ্রি এই যে তাপমাত্রা গুলি মানুষের সামনে আসে সেগুলি মাপা হয় ভোরবেলা। এটা শীতের আমেজ।” এই জোনের মধ্যেই এখন রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শীত। তাই আবহবিদদের ভাষায় এখানে এখন অনুভূত হচ্ছে শীতের আমেজ।
বাকি রইল জাঁকিয়ে শীতের তাপমাত্রা। গণেশকুমার দাস জানাচ্ছেন, “জাঁকিয়ে শীত তখনই বলা হবে যখন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির নীচে যায় এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও থাকে ১৫-র নীচে।” সেটা হতে আর খুব বেশী দেরী নেই। কারণ বাংলাদেশের ঘূর্ণাবর্ত থেকে শ্রীলঙ্কার সাগরের উপর নিম্নচাপ কোনটিই এরাজ্যে বিশেষ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন না আবহাওয়া দফতর। শীতের আমেজ নিতে নিতেই যে জাঁকিয়ে শীত পড়বে তা বলাই যায়। অপেক্ষা আর কয়েক দিনের।