‘বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালককে বদলির আদেশ, রাজশাহীতে মিষ্টি বিতরণ

শ্যাম কিশোর রায়। ফাই ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শ্যাম কিশোর রায়কে বদলি করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সোমবার (০১ মার্চ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করা হয়।

এদিকে নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে শ্যাম কিশোর রায়ের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। যার কারণে বিএমডিএ’র সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তার বদলির আদেশে রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বিশেষ করে বিএমডি’র কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং এতদসংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন ঠিকাদার তার বদলির আদেশ শুনে মিষ্টি বিতরণ করেছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বায়ত্তশাসিত এই প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তা শ্যাম কিশোর রায় ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে বিএমডিএ-তে যোগদানের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে প্রকৌশলীদের মধ্যে বিভক্তি, কর্মচারী ইউনিয়ন নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব, কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ, বিপুল অঙ্কের টাকার অডিট আপত্তি, অডিট আপত্তি নিষ্পত্তিতে ধীরগতি, সিন্ডিকেটের আধিপত্য বিস্তারসহ বিএমডিএ-তে নানা অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া করোনাকালে সাধারণ ছুটির পরও হাতে গোনা দুই-এক দিন তিনি অফিস করেছেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। বাসায় বসেই গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্রে স্বাক্ষর এমনকি নিজের বাসাতেই ঠিকাদারি সিণ্ডিকেট ও তার আজ্ঞাবহ কর্মকর্তাগণ অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এমনকি তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের ফোন রিসিভ না করারও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিএমডিএ’র নতুন তিনটি প্রকল্পে চিহ্নিত বিতর্কিতদের (বিএনপি-জামায়াত) পদায়ন করারও অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের খবরও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এদিকে বিএমডিএ’র শীর্ষ এই কর্মকর্তার বদলির আদেশের খবর শুনে স্বায়ত্তশাসিত এই প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পদের কমকর্তা-কর্মচারি, ঠিকাদার ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উল্লাস প্রকাশ করেছে।

তার বদলির আদেশের খবর শুনে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের রাজশাহী মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম রেজা বাইরোন বলেন, বিএমডিএ একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালকের কর্মকাণ্ডে তার যোগদানের পর থেকেই চরম স্থবিরতা নেমে এসেছিল। এই প্রতিষ্ঠানটি উত্তরাঞ্চলের কৃষিখাতে যুগপোযোগী ও কার্যকর ভূমিকা রেখে আসছিলো। কিন্তু তার কারণেই সেই ভূমিকায় চরম ফাটল ধরেছিল। তবে তার বদলি হয়ে যাওয়ায় রাজশাহীর আপামর জনসাধারণের প্রাণের এই প্রতিষ্ঠানটি আবারও প্রাণ ফিরে পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শুধু বাইরোনই নন; ইডির বদলির খবর শুনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতাকর্মী, বিএমডিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

এএইচ/এস