বিএফএফ-সমকাল বিজ্ঞান বিতর্ক প্রতিযোগীতায় রাজশাহী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন বগুড়া, রানারআপ সিরাজগঞ্জ


নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিএফএফ-সমকাল জাতীয় বিজ্ঞান বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রাজশাহী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল। রানার আপ হয়েছে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এতে শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয়েছেন, বিজয়ী দলের নাফি বিন হাসান। শুক্রবার রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগিতা শেষে এদিন বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ী, রানার আপসহ অংশ গ্রহণকারী সকল দলের হাতে ক্রেস্ট এবং সনদপত্র তুলে দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও সমকাল সুহৃদ সমাবেশের রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক হবিবুর রহমান। প্রতিযোগিতায় স্পন্সর হিসেবে আছে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড।

সমকালের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান সৌরভ হাবিবের সভাপতিত্বে এর আগে সকাল ১০টায় প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল খালেক। আরো উপস্থিত ছিলেন, সমকালের নাটোর প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা নবীউর রহমান পিপলু।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু বলেন, সংস্কৃতি সম্পৃক্ততা ছাড়া একটি শিক্ষা কখনো শক্তিশালী হতে পারে না। আর শক্তিশালী শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়া একটি দেশের জাতীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব না। সুতরাং আমাদের শিক্ষাকে অবশ্যই সংস্কৃতি নির্ভর করে তুলতেই হবে। এখন সংস্কৃতিক নির্ভর করে তুলতে গেলে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে, ঐতিহ্য চর্চায় আগ্রহী করে তুলতে হবে। আমাদের এই সংস্কৃতির মধ্য থেকে তাদেরকে স্বপ্ন দেখাতে হবে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের রাস্তা তৈরি করে দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, কবিগুরু বলেছেন, আমরা যে শিক্ষা দান করি বা লাভ করি তা শুধুমাত্র তথ্য দেয়না। এটি সত্যও প্রদান করে। সুতরাং আমাদের শিক্ষাকে সত্যনির্ভর করতে হবে। সত্যনির্ভর করতে হলে মুক্তবুদ্ধি চর্চার কোনো বিকল্প নেই। এই মুক্তবুদ্ধি চর্চার অন্যতম উপায় বিতর্ক। অন্যের সত্য শ্রবণ করে নিজের সত্য দিয়ে যুক্তিখণ্ডনের মাধ্যমেই নিজের মেধাকে তুলে ধরার প্রক্রিয়া বিতর্ক।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল খালেক বলেন, একটি দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে জ্ঞাননির্ভর মানুষের দরকার। বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞাননির্ভর, সহনশীল, যুক্তিনির্ভর, বিজ্ঞানমনস্ক মানবিক মানুষ দরকার। এইগুণগুলো অর্জন করার জন্য যেসব মাধ্যম রয়েছে বিতর্ক তার মধ্যে অন্যতম মাধ্যম। বিতর্কে যারা অংশগ্রহণ করে তাদেরকে বক্তৃতা, শব্দচয়ন, বাক্যনির্মাণ, বর্ণবিন্যাসে চৌকস হতে হয়। তারা জানে না, কোন বিষয়ে তাদেরকে বিতর্ক করতে হবে। খুবই কম সময়ে তারা কোনো বিষয়ে বিতর্ক করে থাকে। এজন্য তাদেরকে সববিষয়ে জ্ঞান থাকতে হয়। বিতর্কের মাধ্যমে জ্ঞান শাণিত হয়। আমরা এখন অসহিষ্ণুতা হযে পড়েছি। সহিষ্ণুতা আমাদের নেই। আমরা জানি, না জানি, অন্যদের মত নয় নিজের মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। বিতর্ক অন্যের মতকে শুনতে, ভাবতে ও প্রাধাণ্য দিতে শেখায়। এসময় তিনি সমকালকে এমন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

দিনব্যাপী প্রতিযোগিতায় রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার ৮টি চ্যাম্পিয়ন দল অংশ নেয়। অংশ নেওয়া দলগুলো হলো- রাজশাহী গভঃ ল্যাবরেটরী হাইস্কুল, পাবনা কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নওগাঁ জিলা স্কুল, নববিধান উ”চ বালিকা বিদ্যালয়, বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল, জয়পুরহাট সরকারি বালিকা উ”চ বিদ্যালয় এবং এশিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

প্রতিযোগিতার বিভিন্ন রাউন্ডে বিচারক হিসেবে ছিলেন, ফাহমিদা আফরোজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সুহৃদ সমাবেশের সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক লিখন আহমেদ, সুহৃদ রুবাইয়া জান্নাত বৃষ্টি, আহসান হাবীব জিশান, ইমরান হোসেন, শফিকুল ইসলাম, ইয়াছিন মোল্লা, রিমা আক্তার, আশফাকুর রহমান, জায়িদ হাসান, আকিব হোসেন, জান্নাতুল ফেরদৌস, রবিউল ইসলাম এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সুহৃদ রোহান, শাহরিনা আফরোজ।

এস/আই