বিএনপি বিলুপ্ত হয়ে যাবে: স্বপন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে আর কখনও বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না। ক্ষমতায় তো আসবেই না, বরং বিএনপি নামের দলটিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ জনগণ কখনও তাদের সমর্থন করবে না।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি এবং এবং দেশ নিয়ে অব্যাহতভাবে মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির প্রতিবাদে রাজশাহীতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মঙ্গলবার বিকালে রাজশাহী মহানগরীর বাটার মোড় এলাকায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ এর আয়োজন করে।

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, যাদের জন্ম খুনের মধ্য দিয়ে, যাদের চেতনার মধ্যে রক্ত- তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন। জিয়াউর রহমান শুধু বঙ্গবন্ধু খুনের সাথেই নয়, কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চারনেতার হত্যাকান্ডের সাথেও জড়িত। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা দেশের যে উন্নয়ন করেছেন, তা দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এ কারণে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশের জনগণ। সম্প্রতি পৌরসভা নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগের পক্ষে রায় দিয়েছেন। আর এসব দেখে বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি বিষোদগার করছেন। তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।

স্বপন বলেন, শেখ হাসিনাকে এর আগে ২১ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁকে রক্ষা করেছেন। তাই আমরা শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিকে বিচলিত নই। বিএনপি পূর্বের ন্যায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করছে। কিন্তু জনগণ আমাদের পাশে আছেন। বিএনপির এসব অপতৎপরতার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

সমাবেশেম প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়ত জোট সারাদেশে কী করেছে তা দেশের জনগণ জানেন। আপনারা সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। মিনু আপনার দলের নেতাকর্মীরা সে সময় সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছেন। কিন্তু আপনারা সফল হননি। এসএম কামাল বলেন, যারা বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিতে চায়, তারাই শেখ হাসিনাকে হমকি দিচ্ছেন। তারাই তারেক জিয়ার নেতৃত্বে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটাতে চেয়েছিলেন। সে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। একারণেই বিএনপি নেতা মিনু আবারও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। লিটন বলেন, বিএনপি সমাবেশ করতে চেয়েছিল। সরকার মনে করেছে কথা বলার অধিকার আছে, সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু আমরা দেখলাম কুকুরের লেজ কখনও সোজা হয় না। ছেড়ে দিলেই কয়েল হয়ে যায়। আর কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। বিএনপি আসলে কোন দলই না। রাজনৈতিক শিষ্টাচার থাকলে তারা এভাবে কথা বলতে পারতেন না। বিএনপি নেতা মিনুকে উদ্দেশ্য করে লিটন বলেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘তুমি’ করে কথা বলেন! ভাগ্য ভাল আপনার জিহ্বাটা ছিঁড়ে ফেলা হয়নি। আমরা সেটা পারি।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সমাবেশ পরিচালনা করেন। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন এমপি, লায়েব উদ্দিন লাবলু প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। এই বক্তব্যের জন্য মহানগর আওয়ামী লীগ মিনুকে ক্ষমা চাইতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। নইলে মামলা করারও ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। আল্টিমেটামের ৭২ ঘণ্টা পর মিনু গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়ে নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে সাবেক এই মেয়র ক্ষমা চাননি। ক্ষমা না চাওয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মিনুসহ চার নেতার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করা হয়েছে। আর বিকালে অনুষ্ঠিত হলো এই প্রতিবাদ সমাবেশ।