রবিবার , ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বাহাত্তর বছর বয়সেও ঘুরে বেড়াচ্ছেন সমুদ্রের তলদেশে

Paris
ডিসেম্বর ১০, ২০১৭ ৫:০৪ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

চার্লি ভেরনের বয়স এখন বাহাত্তর। তরুণ বয়সে সাগরের তলদেশের বিস্ময়কর প্রাণীজগত তাকে আগ্রহী করে তোলে সমুদ্র বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করার জন্য। আর গত পঞ্চাশ বছর ধরে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে ডাইভিং করছেন তিনি।

চার্লিকে বলা হয় ‘গডফাদার অব কোরাল’। এই মূহুর্তে বিশ্বের পরিচিত সামুদ্রিক প্রানীর মধ্যে কুড়ি শতাংশের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন তিনি।

এর মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশে প্রানীজগত ও প্রবালের জীবন চক্র সম্পর্কে মানুষের সাধারন ধারণা অনেকটাই তিনি বদলে দিয়েছেন।

কিভাবে এসব কিছুর শুরু সেই গল্প বলতে গিয়ে মি ভেরন বলছিলেন, “আমার যখন ১৮ বছর বয়স, আমি তখন প্রথম সমুদ্রের তলদেশে যাওয়া শুরু করি। ঐ সময়ে এধরণের কাজ কেবল পাগলাটে ধরণের মানুষেরাই করত।”

১৯৭২ সালে চার্লি ভেরন তার স্বপ্নের চাকরি পেয়ে গেলেন। অর্থাৎ তার ভালো লাগার সঙ্গে একশ ভাগ মিলে গিয়েছিল এমন একটি চাকরি পেলেন তখন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার উপকুলে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রথম পূর্ণকালীন সমুদ্র বিজ্ঞানী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

চার্লি ভেরন বলছেন, “আমরা একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ আর অসাধারণ সব প্রানী আবিস্কার করতে থাকলাম। আমরা যে সৌন্দর্য রোজ দেখতাম, তার আসলে কোন তুলনাই হয় না। সাগরের এত নিচে এত প্রান থাকতে পারে, এত জীবন্ত হতে পারে, কোন ধারণাই ছিল না আমার।”

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ যা প্রায় তিন হাজার এর বেশি একক প্রবাল প্রাচীরের সমন্বয়ে গঠিত।

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ

মহাশূন্য থেকে পৃথিবীর যে কয়েকটি বস্তু দৃশ্যমান তার মধ্যে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ অন্যতম। প্রবাল, পলিপস ইত্যাদি কোটি কোটি ক্ষুদ্র অর্গানিজমস দ্বারা এই রিফ কাঠামো গঠিত। এখানে হাজারো প্রানের অস্তিত্ব আছে। ১৯৮১ সালে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

চার্লি ভেরন বলছেন, “আমি তখন এমন একটা পৃথিবী দেখছিলাম, যা আদতেই কেউ কখনো দেখেনি। কেউই দেখেনি এমনটা। এটা ছিল অনেকটা চাঁদে যাবার মত ব্যাপার।”

কিন্তু তার সেই যাত্রার সবটাই সুন্দর ছিলনা। ১৯৮০র শুরুর দিকে, চার্লি খেয়াল করলেন সেখানে একটি অদ্ভুত সাদা প্রবাল প্রাচীর।

এখন আমরা জানি, কোন প্রবাল তখনই সাদা হয়ে যায়, যখন সাগরের পানি খুবই গরম হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে পানির অবস্থা একই রকম থাকলে প্রবাল মরে যায়। কিন্তু সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা তখনো কিছু জানেন না।

সেনিয়ে চার্লি ভেরন বলছিলেন, “আমি একটা সাদা প্রবাল দেখলাম, দেখে মনে হলো ব্লিচ করা। ছবি তুললাম সেটার। সেটা ছিল সাদা হয়ে যাওয়া প্রবালের প্রথম প্রকাশিত কোন ছবি। আমি জানতাম না সেটা কি। ভেবেছিলাম হয়ত অসুস্থ কোন প্রবাল হবে। কিন্তু পুরো জাতের প্রবাল সাদা হয়ে যাবার পর ততদিনে অনেক বছর কেটে গেছে।”

তারপর থেকেই চার্লি প্রবালের সাদা হয়ে যাওয়া ঠেকানোর বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করছেন। প্রবাল নিয়ে তার মত দীর্ঘ সময় ধরে লেগে থেকে আর কেউ কাজ করেনি।

নিজের সেই জ্ঞান থেকে চার্লি বলছেন, সমুদ্রের নিচের প্রাণ বাঁচানোর জন্য এখনো যদি কর্তৃপক্ষ সচেতন না হয় তাহলে, একদিন এসব প্রবাল প্রাচীরের আর কোন অস্তিত্ব থাকবেনা।

সূত্র: বিবিসি

সর্বশেষ - বিচিত্র