বাস চলবে ১ জুন থেকে, খালি রাখতে হবে অর্ধেক আসন

১২টি শর্ত কঠোরভাবে মেনে বাস চালানো যাবে। ১ জুন থেকে বাস চলবে। তবে খালি রাখতে হবে অর্ধেক আসন-জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।শুক্রবার বিকালে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের এক মতবিনিময় সভার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি ১২টি শর্তের কথা তুলে ধরেন।

রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএর অফিসে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন ওবায়দুল কাদের।

নির্দেশনাগুলো হল- ১. স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব ও শারীরিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

২. বাস টার্মিনালে কোনোভাবেই ভিড় করা যাবে না।

৩. তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীরা গাড়ির জন্য লাইনে দাঁড়াবেন এবং টিকিট কাটবেন।

৪. স্টেশনে পর্যাপ্ত হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৫. বাসে কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে পারবে না।

৬. বাসের সব সিটে যাত্রী নেয়া যাবে না।

৭. ২৫- ৩০ শতাংশ সিট খালি রাখতে হবে।

৮. পরিবারের সদস্য হলে পাশের সিটে বসানো যাবে অন্যথায় নয়।

৯. যাত্রী, চালক, সহকারী, কাউন্টারের কর্মী সবার জন্য মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক।

১০. ট্রিপের শুরুতে এবং শেষে বাধ্যতামূলকভাবে গাড়ির অভ্যন্তরভাগসহ পুরো গাড়িতে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে।

১১. যাত্রী ওঠা-নামার সময় শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

১২. চালক, কন্ডাক্টদের ডিউটি একটানা দেয়া যাবে না এবং তাদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোয়ারেন্টিন বা রেস্ট দিতে হবে।

এই ১২টি শর্তের পাশাপাশি পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে পথিমধ্যে থামানো, চা বিরতি অ্যাভয়েড করতে পারলে ভালো। কারণ, সংক্রমণ কোথা থেকে হবে তা কেউই জানে না। যাত্রীদের হাত ব্যাগ ও মালামাল জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করতে হবে। ভাড়া নির্ধারণের জন্য বিআরটিএর একটি কমিটি রয়েছে। সে কমিটি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করে যুক্তিসঙ্গত ভাড়া চূড়ান্ত করবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, পুলিশ প্রশাসন, বিআরটিএ এবং মন্ত্রণালয় আপনাদের সহযোগিতা দেবে। পাশাপাশি নিয়ম অমান্য করলেও শাস্তির কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। এজন্য বিআরটিএর মোবাইল কোর্ট সক্রিয় থাকবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

এদিকে শুক্রবার বিকালে বানানীর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে (বিআরটিএ) পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে এক বৈঠকে একথা বলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম।

সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত হন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বৈঠকের শুরুতে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ আসন খালি রেখে বাস চালানোর কথা বলা হলেও পরে অর্ধেক (৫০ শতাংশ) আসন খালি রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১ জুন থেকে নগর পরিবহন ও দূরপাল্লার বাসে ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখা হবে। যাত্রীদের অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে বাসে চড়তে হবে। পরিবহন মালিকরা চালক ও সহকারীদের মাস্ক দেবেন। বাস ছাড়ার আগে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। আর এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করবে বিআরটিএ, পুলিশ ও মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। এ জন্য রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালে তিনটি কমিটি গঠন করা হবে বলেও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে বাসে ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখলে পরিবহন মালিকদের লোকসানের কথা বলে ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুলে মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। তবে বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। শনিবার বিআরটিএর স্থায়ী ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটি বৈঠকে বসে ভাড়ার বিষয়ে আলোচনা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

যুগান্তর