বাবার কোলে উঠেই স্কুলে যায় মোবারক; হতে চাই কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ার

কামাল হোসেন,শিবগঞ্জ:
দারিদ্রতা আর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ী দক্ষিণপাড়া গ্রামের হাসান আলীর শারীরিক প্রতিবন্ধি মোবারককে। সে দিনমজুর বাবার কোলে বসে সমাপনী, জেএসসি, এসএসসি পাশ করে ভর্তি হয়েছে পল্লী মঙ্গল পলিটেকনিক্যালে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।

 
মোবারক বোঝাতে চায় প্রতিবন্ধীরা জাতির কাছে বোঝা নয়। তাই সে কঠোর পরিশ্রম করে পড়া-লেখা শেষে কাজ করতে চাই।

 
শারীরিক প্রতিবন্ধী মোবারক দিনমজুর বাবার কোলে বসে পাঁচ বছর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাঁচ বছর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এসএসসি পাশ করে। বাবা তাকে স্কুলে রেখে পেটের তাড়নায় ছুটে গেছে কামলা দিতে। সময় মত বাবা স্কুল থেকে বাড়ী নিয়ে গেছে। বাবারও স্বপ্ন শারীরিক প্রতিবন্ধি তার ছেলেকে কারো বোঝা করে রাখতে চান না।

 
মোবারকের বাবা হাসান আলীর সাথে কথা হলে তিনি সিল্কসিটি নিউজকে  জানান, তিনি তার ছেলেকে কখনও কষ্ট দেননি এবং কষ্ট দিতেও চান না। তার প্রতিবন্ধি ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে জাতির কাজে লাগাতে চাই। বাবা মায়ের ২ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে মোবারক ২য়।

 
শারীরিক এ প্রতিবন্ধি মোবারক কেন কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি হয়েছে জানতে চাইলে মোবাবরক বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধি হওয়ায় শিক্ষা অর্জন করে শিক্ষক হলে শ্রেনী কক্ষে শিক্ষার্থীদের বোর্ডে লিখে শিক্ষা দেয়া সম্ভব হবে না। তাছাড়া যে কোন অফিসে চাকুরি হলে কম্পিউটারে বসে কাজ করা সম্ভব হবে বলেই কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি হয়েছে  বলে জানান।

 
‘সেমিষ্টার ফি ৫০ হাজার টাকা কলেজ কতৃপক্ষ মওকুফ করলে, বই-খাতা, দু’সিটের মটরযুক্ত হুইলচেয়ার সহায়তা পেলে দরিদ্র পিতার জন্য অনেক সহায়তা হবে। তিনি যে কোন স্ব-হৃদয় ব্যক্তির সহায়তা কামনা করেছেন।’

 
এদিকে বাবা হাসান আলী জানান, তিনি তার ছেলে মোবারকের পড়া-লেখা থেকে যাতে ঝরে আর্থিক কারণে ঝরে পড়ে না যায় সে জন্য এমপি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস ও ডাইসিন কেম লিঃ ঢাকার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও পল্লী মঙ্গল পলিটেকনিক্যালের কর্নধার মিজানুর রহমানের বরাবর সহায়তার জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। তার দাবী স্ব-হৃদয় ব্যক্তিগণ তার শারীরিক প্রতিবন্ধি ছেলেকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ার।

স/শ