বাজার ছেয়ে গিয়েছে প্লাস্টিক চালে, গুজবে উত্তাল অন্ধ্র-তেলঙ্গানা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সুগন্ধী বিরিয়ানি বিক্রি হচ্ছে। সুস্বাদু মাংস ভরা তাতে। অথচ মাংস বাদে বিরিয়ানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যে উপাদান, সেই সরু লম্বা লম্বা স্বাদু চাল নাকি প্লাস্টিকের! এমন গুজবই প্রথমে ছড়িয়েছিল। পরে তা এমন বড় আকার নিয়ে, বাড়ির হাঁড়িতেও ঢুকে পড়ে!

প্লাস্টিক ডিমের সঙ্গে এ বঙ্গ সম্প্রতি পরিচিত হয়েছে। সেই আতঙ্কের রেশ এখনও টাটকা। পরে যদিও জানা গিয়েছিল, এ সব আসলে গুজব! এ বার সেই ডিমের পথেই হাঁটল চাল! ডিম-আতঙ্কের কেন্দ্র ছিল মূলত কলকাতা, সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। এ বার চাল নিয়ে গুজব ছড়াল অন্ধ্রপ্রদেশ-তেলঙ্গানায়।

চাল নিয়ে অভিযোগটা প্রথম ওঠে হায়দরাবাদের সারূরনগরের এক রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে। সেখানে প্লাস্টিক চালের বিরিয়ানি বিক্রি হচ্ছে বলে এক ক্রেতা অভিযোগ তোলেন। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার আগেই মিরপেট থেকে ফের প্লাস্টিক চালের কথা শোনা যায়। অভিযোগ, স্থানীয় মুদির দোকানে প্লাস্টিকের ভেজাল চাল বিক্রি করছেন দোকানদারেরা। আর, সেই চাল সেদ্ধ হওয়ার সময়েই কেমন দলা পাকিয়ে যাচ্ছে!

দু’দিন আগে বাজার থেকে চাল কিনেছিলেন মিরপেটের নন্দনাভানাম কলোনির বাসিন্দা অশোক কুমার। রাতে খেতে বসে তিনি দেখেন, ভাত কেমন জমাট বেঁধে গিয়েছে। এবং স্বাদটাও কেমন সাধারণ ভাতের থেকে আলাদা। খিদের মুখে তিনি খেয়েও নেন সেই ভাত। তার পর থেকেই নানাবিধ পেটের সমস্যা শুরু হয়। একা অশোক নন, পরিবারের সকলেই পেটের সমস্যায় ভুগতে থাকেন। এর পরেই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান ওই ব্যক্তি। একই ধরনের অভিযোগ আসতে থাকে অন্ধ্রপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

অন্ধ্রপ্রদেশের ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরের অন্তর্গত ওজন ও পরিমাপ বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক শ্রীনিবাস রাও জানিয়েছেন, নজরদারি আরও জোরদার করতে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি, বেশ কিছু দোকান থেকে চালের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্লাস্টিক চালের খবর রটতেই বিষয়টি জানতে পারি। বেশ কিছু দোকান থেকে চালের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গরমিল ধরা পড়লেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, নকল চালের কোনও প্রমাণ এখনও আমরা হাতে পাইনি।’’

অন্য দিকে, গোটা ব্যাপারটাকেই গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন চাল ব্যবসায়ীরা। অন্ধ্রের এক চাল ব্যবসায়ী কে ভীমা রাও জানিয়েছেন, শহরের কোনও দোকানে নকল চাল বিক্রি করা হচ্ছে না। পুরোটাই গুজব। এ রাজ্যে চালের কোনও অভাব নেই। তাই ভেজাল জিনিস বাজারে আসার সম্ভাবনাও নেই।’’