বাঘায় পদ্মার বালু চরে চিনা বাদামের বাম্পার ফলন

আমানুল হক আমান
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার বালু চরে চলতি মৌসুমে চিনা বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার পদ্মার চরে ৫০ হেক্টর জমিতে চিনা বাদামের চাষ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, উপজেলা পদ্মার চরে চলতি মৌসুমে ৪৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু তার চেয়ে ৫ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়। ফলনও হয়েছে ভাল। পদ্মার চরে বাদাম চাষিরা ত্রিদানা জাতের আবাদ বেশি করে।

উপজেলার পদ্মার ১৫টি চর নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের চারদিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পদ্মা নদী। পদ্মা নদীর মধ্যে দাদপুর, পলাশি, পলাশি ফতেপুর, নিচপলাশি, কালিদাশখালি, চকরাজাপুর, বিমানপাড়া, চৌমাদিয়া, টিকটিকিপাড়া, দিয়াড়কাদিরপুর, কাদিরপুর, মানিকেরচর, তেমাদিয়াচরগুলোতে ব্যাপক বাদামের চাষ করা হয়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর ভাল দাম থাকায় চাষিরা বাদাম চাষে ঝুকেন।

পদ্মার চরের স্থানীয় কৃষক আসলাম হোসেন, মজিবর রহমান, শফিকুল ইসলাম, সালাউদ্দীন, শহিদুল ইসলাম, ফজলু মেম্বর, আব্দুল আওয়াল, ইদ্রিস আলী, জালাল উদ্দীন, জহুরুল মালিথা, বারেক মোল্লাসহ শতাধিক ব্যাক্তি চিনা বাদামের চাষ করেন।

চকরাজাপুর চরে বাদাম চাষী ফজলু মেম্বর জানান, তিনি চলতি মৌসুমে আট বিঘা জমিতে বাদামের চাষ করেন। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতা নিয়ে উপযুক্ত পরিচর্যা করায় বাদাম ক্ষেতে পোকার আক্রমণ কম হয়। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে ভাল ফলন হয়েছে।

আরেক চাষী শহিদুল ইসলাম মোল্লা জানান, চরের বালুতে বিঘা প্রতি জমিতে চলতি মৌসুমে সাত থেকে আট মণ বাদাম হয়েছে। প্রতি মণ বাদাম বাজার মূল্য আড়াই হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকা। বাদাম পরিচর্যায় খরচ ও সময় কম লাগে।

পদ্মার চরের চকরাজাপুরের ইদ্রিস আলী, জালাল উদ্দীন, বারেক মোল্লা যৌথভাবে ৫০ বিঘা জমিতে বাদামের আবাদ করেন। তাদের খরচ হয়েছে দুই লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এই জমিতে ৬০০ মণ বাদাম হয়েছে। বর্তমান বাজারদর হিসেবে কাঁচা বাদাম ১২ লক্ষ টাকায় বিক্রি হবে।

চকরাজাপুর চরের বাদাম চাষি আসলাম উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে বাদাম ক্ষেতে পোকার আক্রমণ কম ছিল। সার্বক্ষনিক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেখভাল করেন এবং পরামর্শ দেন। রাজস্ব খাতের অর্থায়নে ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণের সহযোহিতায় রোপন করা ৫০ সতাংশ জমি প্রদর্শনীয় ক্ষেত হিসেবে চিহিৃত করেন।

পদ্মার চরের চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, চরে শুধু বাদাম নয়, আলু, বেগুন, পটল, ধান, গম, সরিষাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ হয়। সমতলের চেয়ে চরে বেশি চাষ হয়। ফলনও ভালো হয়। আমি নিজেও এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে ফলন ভাল হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, পদ্মার চরে ৫০ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। তবে চাষিরা সময়মত যত্ন নেয়ায় পদ্মার চরে আগাম জাতের বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে।

স/অ