বাঘায় পদ্মার পাড় ভেঙ্গে নিখোঁজ বৃদ্ধ, গর্ভে বিলীন ৪০ বাড়ি

বাঘা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার পাড় ভেঙ্গে নিখোঁজ হয়েছেন মুজা মাঝি (৬২) নামের এক বৃদ্ধ। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বেলা দেড়টার দিকে পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া চরে এই ঘটনা ঘটেছে। এক মাসের ব্যবধানে ৪০টি পরিবাররের বাড়িঘর পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

জানা গেছে, চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাদিয়া চরের মৃত আলী মাঝির ছেলে মুজা মাঝির ১৫ দিন আগে বাড়ি পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। মনের দুঃখে বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে পাড়ে বসে কান্নাকাটি করছিলেন। এ সময় পদ্মার পাড় ভেঙ্গে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন তিনি। তারপর এলাকার লোকজন জানতে পেরে নৌকা ও জাল নিয়ে খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু দুই ঘন্টা অতিবাহিত হলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া চরের ওয়ার্ড মেম্বর আবদুর রহমান।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া চরের ওয়ার্ড মেম্বর আবদুর রহমান বলেন, এক মাসের ব্যবধানে চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, দিয়ারকাদিরপুর চরের এরশাদ মাঝি, শাহপরায়ন, দিলু ব্যাপারি, করিম তাতীসহ ৪০টি পরিবারের বাড়িঘর পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়া আম বাগান, বড়ই বাগান, পেয়ারা বাগান, শাকসবজি, আখ ক্ষেত, বিভিন্ন ফসলি জমিসহ শত শত বিঘা জমি পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলনে, পদ্মার চরে মধ্যে ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, চকরাজাপুর, পলাশি ফতেপুর, ফতেপুর পলাশি, লক্ষ্মীনগর, চকরাজাপুর, পশ্চিম চরকালিদাসখালী, পূর্ব চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। চকরাজাপুর ও পলাশি ফতেপুর এই দুটি উচ্চ বিদ্যালয়। পদ্মার চরে ৯টি প্রাথমিক ও দুটি উচ্চ বিদ্যালয় মিলে প্রায় ২ হাজার ৬০০ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে আতঙ্কে।

চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, পদ্মায় পানির সাথে সাথে বাড়ছে অতঙ্ক। কখনও ভাঙ্গন, আবার কখনও সর্বস্ব হারানো ভয়। এমন আতঙ্কেই দিন কাটছে চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মার চরের মানুষের। প্রতিবছর পদ্মার মধ্যে বসবাসকারীদের চিন্তার ভাঁজ থাকে নদী ভাঙ্গন নিয়ে। আতঙ্ক থাকে পদ্মার মধ্যে বসবাসকারীরা।

চকাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, চরকালিদাসখালী, জোতকাদিরপুর, দিয়ারকাদিরপুর, লক্ষ্মীনগরসহ ১৫টি চর ভাঙনের মুখে পড়েছে। গত এক মাসে ৪০টি বাড়ি, আম বাগান, বড়ই বাগান, পেয়ারা বাগান, শাকসবজি, আখ ক্ষেত, বিভিন্ন ফসলি জমিসহ শত শত বিঘা জমি পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান বলেন, পদ্মায় বর্তমানে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার সাথে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এরমধ্যে অনেকেই বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। চকরাজাপুর ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আজ ছোট হয়ে যাচ্ছে। ফলে পদ্মা তীর রক্ষার্থে কাজ করলে চকরাজাপুরবাসি নতুন স্বপ্নে উজ্জীবিত হবে।

জি/আর