বাঘায় পদ্মার নদীর নালায় দুটি সেতু নিসঙ্গতায় ৪ বছর


বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে অবিভক্ত গড়গড়ি ইউনিয়নের পদ্মার চরাঞ্চলে পৃথক দুটি পদ্মা নদীর নালার উপর সেতু নির্মাণ করা হয়। বাঘা-লালপুর যাতায়াত সড়কের দক্ষিনে পদ্মার তীর ঘেষে সুলতানপুর ও কড়ালি নওশারা এলাকায় ৪০ ফুট দীর্ঘ এবং ১২ ফুট প্রস্থ সেতু দু’টির নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৬৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু নির্মাণের পর থেকে সেতু দু’টির ওপর দিয়ে মানুষ কিংবা যানবাহন চলাচল করেনা। এমনও নয় যে সেতু দু’টি ঝুঁকিপূর্ণ। শুধু সংযোগ সড়কের অভাবে এই নিঃসঙ্গতা। অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয়নি।

সরেজমিন দেখা গেছে, পদ্মা নদীর নালার পানি মাড়িয়ে সেতুর পাশ দিয়ে মানুষ চলাচল করতে। আর বছরের পর বছর সেতুর চারিদিকের মাটি ধ্বসে যাওয়ার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে, যে কোন সময় উপড়েও পড়তে পারে। এতে করে বিপদাশঙ্কাও রয়েছে, সেতুর পাশ দিয়ে চলাচল করা মানুষের। নির্মাণের পর মাটি না ফেলায় রাস্তা থেকে প্রায় ১৫ ফুট উচু হয়ে গেছে সেতু। যার কারণে সেতু দিয়ে চলাচল করা যায়না।

সড়ক বিচ্ছিন্ন সেতু দুটির একটি হচ্ছে, সুলতানপুর সাধু মিয়ার মোড় সংলগ্ন এলাকার দক্ষিনের পদ্মা নদীর খালের ওপর। আরেকটি এর ৫০০ গজ পূর্বে কড়ালি নওশারা এলাকার খাদেম ও জালেকের বাড়ির দক্ষিনের পদ্মা নদীর খালের উপর। সেতু সংলগ্ন উত্তরে প্রাথমিক বিদ্যালয়। দক্ষিনে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের ফসলি জমি। সেই চরে বসবাস করে ৩৫টি পরিবার। এসব পরিবারের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করার জন্য আসতে হয়, সেতুর উত্তর পাশের সুলতানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এপার থেকে ওপারে আর ওপার থেকে এপারে প্রতিদিন যাতায়াত করে স্কুলগামি শিক্ষার্থীসহ অর্ধ সহাস্রাধিক মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, চলাচল সুবিধার জন্য সেতু দু’টি নির্মাণ করা হলেও কোন কাজেই আসছেনা। তারা এখন সেতুর পাশ দিয়েই চলাচল করেন, বর্ষায় নৌকায় আর শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেটে। মাঠের আবাদি ফসল ঘরে তুলতেও কষ্ট হয় কৃষকদের। বিশেষ করে বর্ষায় বেশি বেকায়দায় পড়ে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। যাতায়াত করতে হয় অনেক দুর ঘুরে। সেতু থাকলেও তাদের দুর্ভোগ শেষ হয়নি।

সুলতানপুর এলাকার কলেজ শিক্ষক সোলাইমান হোসেন ও কড়ালি নওশারা এলাকার মুনসুর আলী মন্ডল বলেন, জনস্বার্থে সেতু নির্মাণ করা হলেও চলাচলের জন্য মাটি ফেলে রাস্তা ঠিক করা হয়নি। নির্মাণের পর থেকেই সেতু দু’টির এই দশা। তারপরেও প্রতিবছর বন্যায় সেতুর পাশের মাটি ধসে অনেক উচু হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তাদের পক্ষ থেকে ঠিকও করা হয়না। যার কারণেই সেতুর পাশ দিয়েই চলাচল করতে হয়। দাদপুর এলাকার সবজি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, সেতুর উত্তরে সুলতানপুর,খানপুর বাজারে যেতে হলে অনেত দুর ঘুরে যেতে হয়।
গড়গড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে দুইজন ঠিকাদার সেতুর কাজ করেছে। তাদের সাথে কথা বলেছি, তারা মাটি ফেলে ঠিক করে দিতে চেয়েছেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দীন লাভলু বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে সেই সেতুর কাজটি হয়েছে। তাতে কিছু কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এমন কাজ করে শুধু রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় করেছে। জনগনের কোন কাজে আসছেনা। আমার সময়ে এমন ধরনের কাজ করতে দিবোনা।

উপজেলা নির্বাহীি অফিসার শাহিন রেজা বলেন, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন।

স /জে