বাঘায় পদ্মার চরের মানুষের ঝুকি নিয়ে নৌকায় পারাপার

আমানুল হক আমান:
পদ্মায় বাড়ছে পানি। আর সেই সাথে বাড়ছে পদ্মার চরাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি। বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরের মানুষের দিন কাটছে চরম দুর্ভোগের মধ্যে। স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ পদ্মা পারাপারে ভোগান্তি নিত্যদিনের সঙ্গী। চরের মানুষের জন্য যাতায়াত দুঃসহ যন্ত্রনার স্বীকার নদী ভাঙ্গন। চরের মানুষের জীবন কাটে অভাব হতাশা আর বঞ্চনায়।
চরের মানুষ দুর্বিসহ জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়। পদ্মার পাড় ভাঙ্গনের ফলে এলাকার মানুষের বেদনা ছাড়া আর কিছুই নেই। যাতায়াত, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, আইন-শৃঙ্খলা, হাটবাজারসহ মৌলিক সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এক নাজুক অবস্থার মাঝে চলে চরবাসীর দৈনন্দিন জীবন। বর্ষা মৌসুমে চরের মানুষের একমাত্র বাহন নৌকা। ফলে অনেকটা  ভরা পানিতে অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পারাপার করেই চলছে চরবাসির জীবন।
অপর দিকে বন্যা, সন্ত্রাসী, দখল, চাঁদাবাজি, ডাকাতির অত্যাচার মোকাবেলা করে তাদের টিকে থাকতে হয়। গড়গড়ি ও পাকুড়িয়া এবং মনিগ্রাম ইউনিয়ন ভেঙ্গে নতুন চকরাজাপুর ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে। এই ইউনিয়নে গত ৪ জুন প্রথম নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছে। গড়গড়ি, পাকুড়িয়া এবং মনিগ্রাম এই তিনটি ইউনিয়নের দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বাঘার পদ্মা নদী।
জানা যায়, পদ্মার চরের মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়ন বর্ষাকালে পদ্মার পানিতে বসবাসকারী ও আবাদী জমি একাকার হয়ে যায়। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিতে পিছিয়ে পড়া চরাঞ্চলের মানুষ সর্বক্ষেত্রে অবহেলিত উপেক্ষিত। সরকার বদল হয়। বদলে যায় অনেক কিছুই। শুধু বদলায়না চরাঞ্চলের নিত্য দিনের চিত্র আর চরবাসীর ভাগ্য। এই অঞ্চলের রাস্তাগুলো বর্ষায় চিনা যায় না। চরাঞ্চলে নয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও হতদরিদ্র শিশুদের জন্য ২০১২ সাল থেকে নদী ও জীবন প্রকল্প সেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে নয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।
এছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের কোন শিক্ষা প্রতিষ্টান নেই। কয়েক বছর আগে বন্যায় চৌমাদিয়া, লক্ষীনগর, চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় তিনটি বন্যায় ভেঙ্গে গেলে অন্যেত্রে স্থানান্তর করা হয়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতিদিন নৌকায় যায়। নৌকায় ফিরে আসে। তাদের দুর্গোম পথ ডিঙ্গিয়ে আসতে হয় সদরে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে একই অবস্থা।
চরবাসিরা জানান, প্রতিদিন তাদের জীবনের ঝুকি নিয়ে বর্ষা মৌসুমে নৌকায়, খরা মৌসুমে পায়ে হেটে চলাচল করতে হয়। এছাড়া তাদে আর কোন পথ নেই।
নবগঠিত চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, চরে কোন রাস্তা-ঘাট ছিল না। তবে ২০১৪ সালের ৫ জুলাই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি পলাশিফতেপুর-চকরাজাপুর সড়কের আড়াই কিলোমিটার পাকা রাস্তার করে দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে পাকা রাস্তা করার পরিকল্পনা এই সরকারের আছে। এছাড়া আমি সবে মাত্র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। চরকে পর্যায় ক্রমে উন্নয়ন করব।
স/শ