বাঘায় খোলা আকাশের নিচে ৬০০ শিক্ষার্থীর পাঠদান

আমানুল হক আমান:
ভাঙনে পদ্মা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে অফিস। খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে। স্থান নির্ধারন করা হলেও তিন সপ্তাহেও কোন ঘর তোলা হয়নি।

জানা যায়, বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি ভাঙন থেকে সরিয়ে নিতে নিতে ১২ আগষ্ট দুপুরে নদী গর্ভে একেবারে বিলিন হয়ে যায়। দীর্ঘ ২২ দিন শিক্ষার্থীদের কোন ক্লাস হয়নি। তারা প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে এসে এদিক-সেদিক ঘুরা ফেরা করে বাড়ি চলে যায়। পাশাপাশি শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে এসে হাজিরা খাতায় সাক্ষর করে চলে যায়। এভাবে চলে ২২ দিন। তবে এর মধ্যে ঈদের এক সপ্তাহ ছুটি ছিল। ছুটি শেষে গত ২৯ আগষ্ট থেকে বিদ্যালয় চালু হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে দুই-একটি ক্লাস নিয়ে ছুটি দেয়া হচ্ছে।

এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৬১৩ জন। অবশেষে ২২ দিন পর ভাঙন থেকে দেড় কিলোমিটার উত্তর েিদক বিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কোন ঘর তোলা হয়নি। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের ঠিকমত ক্লাস না হওয়ায় চিন্তায় রয়েছে অভিভাবকরা। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ট্রেস্ট ও ১ নভেম্বর থেকে জেএসসি পরীক্ষা শরু হবে। শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আখি খাতুন ও জেসমিন আক্তার জানায়, সামনে ট্রেস্ট পরীক্ষা, জায়গার অভাবে স্যারেরা ক্লাস নিতে পারছে না। দুই-একটি খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নিয়ে ছুটি দিচ্ছে। ফলে এদিক-সেদিক ঘুরাফেরা করে চলে যায়।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম জানায়, ১ নভেম্বর থেকে জেএসসি পরীক্ষা শরু হবে। জায়গার অভাবে ক্লাস হচ্ছে না। ক্লাস না হলে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করা সম্ভব হবে না।

চকরাাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, নির্ধারিত জমিতে ধান থাকার কারনে ঘর তোলা হয়নি। দুই/এক দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘর তোলা হবে। এছাড়া আসবাপত্রগুলো আমার বাড়ির আঙ্গিনা থেকে নির্ধারিত জায়গায় আনা হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে দুই-একটি ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
তবে ক্লাস করার মতো পরিবেশ এখনও তৈরী করতে পারেনি।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিযুল আযম বলেন, ভাঙন থেকে দেড় কিলোমিটার উত্তর দিকে কালিদাসখালী মোজায় একটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে ঘর তোলার কাজ শরু হবে।

বাঘা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের মালামাল নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘর তোলা না হওয়ার কারনে ক্লাসের পরিবেশ হয়নি। তারপরও খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, নদী ভাঙন ও বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হয়েছে। স্থান নির্ধারন হয়েছে। ঘর তোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স/শ