বাঘায় খাল খননের ভেকু উঠিয়ে নেয়ায় বৃদ্ধা রহিমার মনে স্বস্থি

আমানুল হক আমান:
রাজশাহীর বাঘায় খাল খননের ভেকু উঠিয়ে নেয়ায় বৃদ্ধা রহিমার বেগমের মনে স্বস্থি নেমে এসেছে। ভেকু উঠিয়ে নেয়ায় জমির কাগজ হাতে নিয়ে আজ (৩১মে) শুক্রবার মনের আনান্দে তার জমি দেখাচ্ছিলেন।

জানা যায়, রহিমা বেগমের মাত্র ১৮ কাঠা জমি। এই জমি থেকে যে ধান হতো, সেই ধান দিয়ে সংসার চলতো। এই জমিটুকুর উপর দিয়ে প্রকল্পের অনুমোদন নিয়ে খাল খনন কাজ শুরু করে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জমির মালিকরা রাজশাহীর আদালতে পৃথকভাবে ৪টি মামলাও দায়ের করেন। তারপর কাউকে তোয়াক্কা না করে চলে খাল খননের কাজ।

তারপর থেকে রহিমা বেগম শেষ সম্বলটুকু বাচাতে বিভিন্ন নেতা কর্মীর কাছে দোঁড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে কোন কাজ না হওয়ায় কাগজ বুকে নিয়ে জমিতে অবস্থান করতে থাকে। এ জমির ধার দিয়ে ৬টি মেহগনি গাছ ছিল, সেগুলো খাল খননকারীরা কেটে ফেলে। তার এ জমিতে আরো ৬টি আম গাছ আছে। খননকারীরা সেগুলো কেটে নেয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন। রহিমা বেগমের এই চিত্রটি বিভিন্ন সংবাদ পত্রে প্রকাশ হলে বাধ্য হয়ে খনন কাজের ভেকু সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তারপর থেকে রহিমা বেগমের মনে স্বস্থি পেয়েছে।

৪৮ বছর আগে রহিমা বেগমের স্বামী নুর মোহাম্মদ মারা গেছেন। তার ৫টি কন্যার এ জমির ওপর নির্ভর করে অনেক কষ্টে তাদের বিয়ে দিয়েছেন। বৃদ্ধা রহিমার বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়নের বেলগাছি গ্রামে। রহিমা বেগমের মাত্র ২ শতাংশ জমির ওপর একটি টিনের ছাপরা ঘর রয়েছে। এ ঘরে সে বসবাস করে।
বৃদ্ধা রহিমা বেগম বলেন, দুনিয়াতে আমার কেউ নেই। আল্লাহ আমার জমি রক্ষা করেছে। খাল খননকারীরা ভেকু তুলে নিয়ে গেছে। আমি আবার জমিতে ধানের আবাদ করতে পারবো। বছরের খাদ্য ঘরে আসবে।

উল্লেখ্য, মোশিদপুর থেকে নওটিকা আরিফপুর পর্যন্ত ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৮ দশমিক ২ কিলোমিটার খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন হয়। ধানী জমির ওপর দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ না করে শুধু প্রকল্পের অনুমোদন নিয়ে ২৪ মে খাল খনন কাজ শুরু করে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফুল হক বলেন, বাঘার মানুষের উন্নয়নের জন্য মন্ত্রীর সুপারিশে প্রকল্প অনুমোদন হয়। সেই মোতাবেক কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু জমি মালিকদের সমস্যার কারনে বর্তমানে ভেকু উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। পরবর্তিতে এ বিষয়ে সিধান্ত নেয়া হবে।

বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, শুনেছি খাল খননের ভেুক উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। জমি মালিকদের সাথে সমাধান করে পূনরায় খনন করা হবে।

স/অ