বাঘায় এবার হলুদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

আমানুল হক আমান, বাঘা:

রাজশাহীর বাঘায় চলতি বছর হলুদের বাম্পার ফলনের দেখা দিয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। তবে বীজ সংরক্ষণে সরকারি ব্যবস্থাপনা না থাকায় দাম কম ও সংকট দেখা দেয়। বীজ সংরক্ষণাগার নির্মাণের দাবি জানান চাষীরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, মাঠে কৃষকরা হলুদের পরিচর্চায় ব্যস্ত রয়েছেন। আড়ানী গোচর গ্রামের হলুদ চাষী আবদুর রাজ্জাক বলেন, উপজেলায় পাবনায়, গাঙ্গীয়া, সোনামুখী, ডিমলা বারী-১ প্রভৃতি জাতের হলুদ চাষ হয়। এ মৌসুমে গাঙ্গীয়া জাতের হলুদ ভাল ফলন হবে আশা করছেন।

 

এ জাতের হলুদ আকারে মোটা এবং রং অন্যান্য হলুদের তুলনায় ভাল। প্রতি বিঘা জমিতে ৪৫ থেকে ৫০ মণ উৎপাদন হয়। গত মৌসুমে প্রতি মণ কাঁচা হলুদ বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এ মৌসুমে এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার পাঁচ’শ টাকায় বিক্রির আশা করছেন।

 

তিনি আরও বলেন, গত মৌসুমের তুলনায় এ মৌসুমের হলুদের দাম ভাল হবে আশা করছেন।
হলুদ চাষে জৈবসার ব্যবহারে খরচ খুব কম হয়। বিঘা প্রতি সার ও বীজসহ খরচ হয় প্রায় আট থেকে ১০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমির কাঁচা হলুদ গত মৌসুমে বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায়।

 

এ বছর বিক্রি হবে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়।

 

কুশাবাড়িয়ার গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন সিল্কসিটি নিউজকে জানান, বাগানের ছায়াযুক্ত জমিতে হলুদ চাষ ভাল হয়। এক সাথে ফল ও হলুদ দুটো পাওয়া যায়।

 

গত মৌসুমে ডিমলা বারী-১ জাতের ৪০ কেজি হলুদ রোপন করে ১৫ মণ হলুদ পেয়েছি। দামও ভাল। এ মৌসুমেও ফলন ভাল হবে আশা করছি। হামিদকুড়া গ্রামের সোহেল রানা বলেন, রোপণের সময় বীজ সংকটের কারণে বেশী জমিতে আবাদ করা যায়নি।

 

হলুদ উঠানোর সময় বীজ সংরক্ষণ করতে হয়। সরকারি ভাবে বীজ সংরক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হলে আগামীতে অনেক চাষী হলুদ চাষ করতে আগ্রহী হবে। গোচর গ্রামের আশরাফ আলী উপজেলায় সরকারিভাবে বীজ সংরক্ষণাগার নির্মানের দাবি করে জানান, গত মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমে হলুদের চাষ ভাল হয়েছে। দামও ভাল আশা করছেন তিনি।
হলুদ ব্যবসায়ী একরামুল হক সনত বলেন, আড়ানীর হলুদের সুনাম দেশ ব্যাপী রয়েছে। আমরা প্রতি সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার হাটে হলুদ কিনে ঢাকা, চট্রগ্রাম, ময়মনসিংহ, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন জায়গাতে নিয়ে যায়। বর্তমানে ৪০ কেজি শুকনা হলুদ সাড়ে তিন হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলায় সাড়ে ৬০০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন।
উপজেলা সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা বেগম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, উপজেলার পাশ দিয়ে বড়াল নদী বয়ে যাওয়ায় জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকে না এবং উচু ও ছায়াযুক্ত জমিতে হলুদের ফলন ভাল হয়। তবে গত মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমে ফলন আরো বেশি ভাল হবে আশা করছি।

স/আর