বাগাতিপাড়ায় ভূতুড়ে বিলে অতিষ্ট গ্রাহকরা, মিটার রিডার সাময়িক বরখাস্ত

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি:
নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ভূতুড়ে বিলে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে নাটোরের বাগাতিপাড়ার কয়েকশ’ গ্রাহক। সম্প্রতি উপজেলার কয়েকটি এলাকায় এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের তোপের মুখে পড়েন মিটাররিডার কাম ম্যাসেঞ্জার। পরে কর্তৃপক্ষ সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার এ ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন উপজেলার গালিমপুর এলাকার শতাধিক গ্রাহক। এর আগে মাড়িয়া গ্রামে একই ঘটনায় মিটার রিডার আব্দুল জলিলকে অবরুদ্ধ করে। তাছাড়াও সাতসৈল গ্রামেও তোপের মুখে পড়েন মিটার রিডার। এদিকে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মিটার রিডারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার আব্দুল জলিল উপজেলার গালিমপুর গ্রামে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গত মাসের বিদ্যুৎ বিল পৌঁছে দিতে যান।
কিন্তু ওই বিলের টাকার পরিমান দেখে গ্রাহকদের চোখ কপালে ওঠে। তারা ওই বিল দেখে বিস্মিত ও হতভম্ব হয়ে যায়। তারা দেখে প্রত্যেকের বিদ্যুৎ বিল বিগত মাসের চেয়ে কয়েকগুন বেশী। এসময় ওই গ্রামে গ্রাহকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে বিল সরবরাহকারী মিটার রিডার আব্দুল জলিলের কাছে বিল বেশী হওয়ার কারন জানতে চায়। কিন্তু মিটার রিডার সদুত্তর দিতে না পারায় গ্রাহকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। পরে কর্তৃপক্ষ বিলগুলি প্রত্যাহার করে সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দিলে গ্রাহকরা শান্ত হয়।

গ্রাহকরা জানান, এই ভুতুড়ে বিল পরিশোধ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এক মাসের বিল পরিশোধ করতে না পারলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। গ্রাহকদের পুনরায় সংযোগ নিতে নাটোর অফিসে গিয়ে ১২শ টাকা জরিমানা গুনতে হয়। ওই ভুতুড়ে বিল হাতে পেয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। গালিমপুর গ্রামের সেলিম রেজা বলেন, গত জুলাই মাসে তার বিদ্য্ৎু বিল আসে এক হাজার ১০২৩ টাকা। আগষ্ট মাসে একই সরঞ্জামাদী ব্যবহার করেছেন। অথচ তার বিদ্যুৎ বিল করা হয়েছে দুই হাজার ৮৫৩ টাকা।

গ্রাহক শহিদ জানান, গত জুলাই মাসে তিনি বিদ্যুৎ বিল দিয়েছেন ৪৪৭ টাকা। এবার আগষ্ট মাসে বিল এসেছে ১হাজার একশ’ ৫৩টাকা। এমন অভিযোগ গালিমপুর গ্রামের প্রায় সকল গ্রাহকের। এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার মাড়িয়া গ্রামেও একই ঘটনায় প্রায় ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে মিটার রিডার আব্দুল জলিলকে। পরে কর্তৃপক্ষের সংশোধনের আশ্বাসে বিলগুলি প্রত্যাহার করে নিলে গ্রামবাসী অবরুদ্ধ ওই মিটার রিডারকে ছেড়ে দেয়। সাতসৈল গ্রামেও সম্প্রতি ভুতুড়ে বিলে তোপের মুখে পড়েন মিটার রিডার।

এদিকে গালিমপুর গ্রামে ভুতুড়ে বিলে গ্রাহকদের বিক্ষোভের ঘটনায় বুধবার দুপুরে নাটোর পল্লী বিদু্যুৎ সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তা গ্রাহকদের সঙ্গে গালিমপুর মোড়ে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে গ্রাহকদের দাবির মুখে পুনরায় মিটার রিডিং নিয়ে বিল সংশোধনের আশ্বাস দেন।

কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন এজিএম (সেবা) নূরে আলম, এজিএম (অর্থ) সরওয়ার আলম হাওলাদার, এজিএম (পরিচালন ও রক্ষণা-বেক্ষণ) কনক হোসেন প্রমূখ।

ওই বৈঠকে এজিএম (সেবা) নূরে আলম বলেন, সংশ্লিষ্ট মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার আব্দুল জলিলকে এ ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সোহরাব হোসেন বলেন, বাগাতিপাড়ায় গ্রাহকদের বিলিংয়ের কিছুটা সমস্যা হয়। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকদের সাথে মতবিনিময় করতে কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট মিটার রিডার আব্দুল জলিলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

স/অ