বাগাতিপাড়ায় ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত গর্ভবতী মায়েরা

মঞ্জুরুল আলম মাসুম, বাগাতিপাড়া:
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি নির্দেশনা মানছেনা কর্তৃপক্ষ। ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গর্ভবতী মায়েরা।

তবে কর্তৃপক্ষরা বলছেন, এ সংক্রান্ত আদেশ দেওয়া হলেও ফ্রি সার্ভিসের কারনে ব্যবহৃত এ্যাম্বুলেন্সের তেল বরাদ্দের সুস্পষ্টতা পাওয়া যায়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তেল বরাদ্দের অর্থ ছাড়ের ব্যাপারটিও নিশ্চিত করা হয়নি। ফলে সরকারের এ নির্দেশনা কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে।

জানা যায়, দেশে মাতৃ মৃত্যুর হার ও শিশু মৃত্যুর হার কমানো এবং প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারী সংখ্যা বৃদ্ধি করার লক্ষে গর্ভবতী ও প্রসুতি মায়েদের বিনা ভাড়ায় সরকারী এ্যাম্বুলেন্স সেবার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ৩ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, ‘গর্ভবতী-প্রসুতি নারীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে গর্ভবতী-প্রসুতি নারীদের আনা-নেওয়া জন্য এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নির্দেশ ক্রমে ফ্রি( ভাড়া ব্যতিত/বিনা ভাড়ায়) করা হলো’।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশনার পর বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় পাঁচ মাস এসেবা দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । তেল বরাদ্দ না থাকার অজুহাতে প্রায় আড়াই বছর থেকে গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীদের স্বাস্থ্য সেবা দিতে আনা নেয়ার জন্য ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সেবা দেয়া হচ্ছেনা । ভাড়া ব্যতিত এ্যাম্বুলেন্স সেবা যে চালু আছে তা অনেকেই জানেননা । ফলে প্রতি নিয়তই তারা বঞ্চিত হচ্ছেন এ সেবা থেকে। হাসপাতালের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে চলতি বছর ৭০ জন গর্ভবতী নারী হাসপাতালে তাদের সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকেই এ্যাম্বুলেন্স সেবা দেওয়া হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুস ছালাম বলেন, গর্ভবতী ও প্রসুতি মায়েদের বিনা ভাড়ায় এ্যাম্বুলেন্সে আনা নেয়া সংক্রান্ত চিঠি এসেছিল। প্রথম দিকে পাঁচ মাস সেবাটি দেওয় হয়েছিল। কিন্তু এ ধরনের নারীদের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে দুরুত্ব নির্ধারন কিংবা এ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলার বাইরে আনা নেয়া করার বিষয়ে সুইস্পষ্ট করে কোন কিছু বলা ছিলনা। এছাড়া কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এর সঠিক ব্যাখ্যা পায়নি। তাই সেবাটি দেয়া যায়নি। ফলে প্রায় আড়াই বছর ধরে গর্ভবতী ও প্রসুতি মায়েদের এ ধরনের সেবা দেওয়া বন্ধ আছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা, আমিনুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, নির্দেশনা পেলেও তেলের অর্থের সংকুলান করার সুস্পষ্ট ব্যাখা পাওয়া য়ায়নি। ফলে তেল না থাকায় সেবাটিও দেওয়া হচ্ছে না।

নাটোর সিভিল সার্জন ডা.আজিজুল ইসলাম বলেন, এব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা আছে। তবে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে এ্যাম্বুলেন্সে ব্যাবহৃত তেল বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি । তেলের খরচটা আসলে কে দিবে এব্যাপারে কোন নির্দেশনা নেই। এবিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।

স/অ