বাগাতিপাড়ায় পরিত্যাক্ত অডিটোরিয়ামে চলছে সরকারী তিন দপ্তরের কাজ

মঞ্জুরুল আলম মাসুম, বাগাতিপাড়া:
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় প্রায় ২১ বছর পূর্বে পরিত্যাক্ত হওয়া অডিটোরিয়ামে ঝুঁকি নিয়ে চলছে সরকারী তিনটি দপ্তরের কাজ। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছেন ওই দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

দ্বিতল ভবনটির উপরের তলায় রয়েছে মৎস্য দপ্তর এবং নিচতলায় খাদ্য দপ্তর ও উপজেলা পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন। এদিকে পরিত্যাক্ত হলেও ওই দপ্তরগুলি থেকে ভাড়াও আদায় করছে উপজেলা প্রশাসন।

অন্যদিকে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় দ্রুত অডিটোরিয়ামটি পুনঃ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন সাংস্কৃতিকর্মীরা।

জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে উপজেলা অডিটোরিয়ামটি নির্মান করা হয়। প্রায় ১২ বছর কার্যক্রম চালানোর পর ব্যাবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় অডিটোরিয়ামের সব কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে স্থান সংকুলান না হওয়ায় দপ্তর তিনটিকে পরিত্যাক্ত অডিটোরিয়ামে কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। প্রায় ২১ বছর ধরে এভাবেই চলছে এসব বিভাগের কাজ।

এদিকে গত বছর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস নবনির্মিত আইসিটি ভবনে স্থানান্তরিত হলেও নতুনভাবে উপজেলা পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন নামের আরেকটি দপ্তরকে পরিত্যাক্ত ভবনে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া রীতিমতো দপ্তরটি থেকে মাসিক ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভুমিকম্পের সময় আতংকে কাটাতে হয় এসব দপ্তরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

মৎস্য অফিস সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে ব্যাবহার অনুপযোগী অডিটোরিয়াম ভবনের কক্ষ মৎস্য দপ্তরের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বছর দেড়েক পুর্বে ছাদের হুক খুলে সিলিং ফ্যান চলতি অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল, তবে কোন ব্যাক্তি আহত হননি। বিষয়টি সেসময় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর ছাদের কিছু অংশ এবং দেয়াল সংস্কার করা হয়েছিল।

মৎস্য কর্মকর্তা ইরিনা মৌসুমী জানান, ছাদ থেকে প্রায়শই পলেস্তার খসে পড়ে। তবে তিনি অফিসের কার্যক্রম চালানোর জন্য স্থায়ী নিরাপদ ব্যবস্থা আশা করেন।


পল্লী উন্নয়ন দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক জাকির হোসেন জানান, তাদের দপ্তরটি নিচের তলায় মাসিক এক হাজার টাকা ভাড়ায় বরাদ্দ নিয়েছেন। গত জুন মাস পর্যন্ত ওই ভবনের ভাড়া ইউএনও অফিস বরাবর পরিশোধও করেছেন।

তিনি বলেন, তাদের ব্যবহৃত ওয়াশ রুমের ছাদের পুরো অংশের পলেস্তার খসে গেছে। তিনি উপজেলার একটি সভায় বিষয়টি জানিয়েছেন।

অফিসার’স ক্লাব কালাচারাল একাডেমীর সংগীত পরিচালক আরশাদ মাহমুদ জানান, ১৯৮৫ সালে অডিটোরিয়াটি নির্মাণের পর অনেক জাতীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সেখানে করা হয়েছে। পরে ১৯৯৭ সালের ১৭ এপ্রিল সব শেষ তিনি সেখানে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছিলেন এবং সেই অনুষ্ঠানের পর ঝুকিপুর্ন হওয়ায় অডিটোরিয়ামটি আর ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। বর্তমানে এর গ্রীণ রুম ও অফিস কক্ষতে সরকারী দপ্তরের কাজ চলছে। তবে তিনি দ্রুত তা ভেঙ্গে নতুনভাবে অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম পুনঃ নির্মানের দাবি জানান।

এসব বিষয়ে তথ্যানুসন্ধ্যানে এলজিইডি দপ্তরে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণার নির্ধারিত তারিখ বা নির্মান সংক্রান্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ বলেন, আধুনিক উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন পেলে অডিটোরিয়ামসহ দপ্তর তিনটির স্থানের সমস্যার সমাধান হবে।

স/অ