বাগাতিপাড়ায় গাছে গাছে মাটির কলস বেঁধে পাখির আবাসন নির্মাণ

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি:
গ্রামে গ্রামে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ঝাঁকে ঝাঁকে নীড়ে ফেরা পাখির দেখা এখন আর তেমন মেলে না। গাছে-গাছে কিচির-মিচির শব্দও আর তেমন শোনা যায় না। গ্রীষ্ম, কি ঘোর বর্ষা, হাঁড় কাপানো শীত কিংবা বসন্ত, পাখির কলতানে আর তেমন মুখরিত হয় না গ্রামগুলো। দোয়েল, কোকিল, ফিঙে, চড়ুই, টিয়াসহ গ্রাম বাংলার এসব পাখি যেন চোখেই পড়ে না। হারিয়ে যেতে বসেছে এসব পাখিগুলো।

তাই এসব দেশীয় পাখি রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খোদেজা বেগম শাপলা।

পাখির জন্য নিরাপদ আশ্রয় নির্মাণে তিনি গাছে গাছে বেঁধে দিচ্ছেন মাটির কলস। তৈরি করছেন পাখিদের জন্য কৃত্রিম বাসা। সম্প্রতি পাখিদের অভয়াশ্রম গড়তে নিজের গ্রামকেই তিনি বেছে নিয়েছেন।

খোদেজা বেগম জানান, পাখির প্রতি ভালবাসা তার ছোট বেলা থেকেই। নারী জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর পাখিদের জন্য কিছু একটা করতে তিনি এ উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। সাধারণ মানুষকে সেবার দেওয়ার পাশাপাশি পাখিরা কিভাবে বাঁচবে, কি খাবে, কোথায় থাকবে এমন ভাবনা থেকে নিরাপদ আশ্রয় নির্মাণে নেমেছেন। উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের মিশ্রিপাড়া গ্রামকে পাখিদের জন্য নিরাপদ আবাস্থল গড়তে ওই গ্রামের প্রতিটি রাস্তার ধারে, পুকুরের পাড়ে, জমির পাশে, বিভিন্ন বাড়ির গাছের ডালসহ গ্রামের আনাচে-কানাচের বিভিন্ন গাছের মগডালে মাটির কলস বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক দিনে শত শত মাটির কলস বেঁধে দিয়েছেন। দেশীয় পাখিগুলো যাতে ওই কলসে নিজ নিজ আশ্রয় খুঁজে নেয়। ফলে গাছে-গাছে আসতে শুরু করেছে পাখি। তার লক্ষ্য গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের বাহক নানা প্রকার বিলুপ্ত হতে যাওয়া পাখির জন্য নিরাপদ বাসস্থান তৈরির মাধ্যমে পাখির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি এবং গ্রাম বাংলার হারানো ঐতিহ্য পাখির কিচির মিচির শব্দ ফিরিয়ে আনা।

তিনি আরও বলেন, ‘পাখি প্রকৃতির অন্যতম সম্পদ। পাখিদের অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করা না গেলে ধীরে ধীরে সব প্রজাতির পাখিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই আমি পাখিদের জন্য অভয়াশ্রম গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। সবাই এগিয়ে আসলে সব পাখিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব’।

স/অ