বাগমারায় সরকারি জমি দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ

বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারার উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল আজিজ লিটনের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে সরকারের ১০ লাখ টাকার সম্পত্তি বেহাত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। পুকুরখননকারীর দাবি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই সরকারি জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অস্বীকার করেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের মুগাইপাড়া বিলে গত কয়েক দিন ধরে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাগিনা পরিচয়দানকারী আব্দুল আজিজ লিটন ও তাঁতীপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী রায়হান আলী নিজের আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে পুকুর খনন শুরু করেন। তিনি মুগাইপাড়া মৌজার ৯ শতক এবং বৈকড়ি মৌজার ২২ শতক সরকারি জমিকে মাঝখানে রেখে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে আরও ১০-১২ বিঘা জমি প্রতি বছরের জন্য ইজারা নেন এবং সেখানে পুকুর খনন শুরু করেন।

গত রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে সরকারি জমি ও ব্যক্তিমালিকানা কৃষিজমিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুকুর খননের দৃশ্য দেখা যায়। পুকুর খননের জন্য চারদিক থেকে মেশিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ৩১ শতক জমিও রয়েছে (যার নম্বর দাগ নম্বর ৩৩৪ ও ১৩৬৯)। পুকুর খননের মাটি ট্রাক্টরে করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। হাছেন আলী, আক্কাছ আলী সহ কয়েক জন ব্যক্তি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পুকুর খনন করা হচ্ছে।

তবে তারা পুকুর খননের জন্য তিনি প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেননি। অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না বলে গত ২০১৫ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেছে। এক্ষেত্রে ধানী জমিতে পুকুর খনন শুরু করলেও প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে সরকারি জমি দখল করে পুকুর খননের বিষয়ে স্থানীয় লোকজন তাঁদের বাধা দিলেও তাঁরা খনন বন্ধ করেননি। প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়। পরে এলাকার লোকজন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অভিযোগ দেন। ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি জমি দখল করে পুকুর খননের অভিযোগের সত্যতা পান।

এই বিষয়ে সরকারি জমি দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ স্বীকার করে আব্দুল আজিজ লিটন রায়হান সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, সামান্য পরিমান সরকারি জমি তাঁর পুকুরের ভেতরে রয়েছে। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই পুকুর খনন করা যাচ্ছে। থানার পুলিশ, উপজেলা প্রশাসনের অনেকে দেখে গেছে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে কার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন তা বলতে পারেননি।

হাটগাঙ্গোপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মেহেদি হাসান বলেন, ওই এলাকায় সরকারি ৩১ শতক জমি রয়েছে। পুকুর খননের জন্য সেগুলো দখলে নেওয়া হয়েছে। তবে মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে পুকুর খননকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে (এসিল্যা-) জানানো হয়েছে।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলমগীর হোসেন মঙ্গলবার বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি তিনি একজন তহশিলদারের (ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার ) কাছ থেকে শোনেছেন। সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুকুর খননের বিষয়ে তাঁদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।
স/শ