বাগমারায় রাস্তার ধারে কাশফুলের ঝাড়, বাড়ছে দুর্ঘটনা

বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় সড়কের ধারে ধারে অপরিকল্পিত বিন্যা ঝাড় চাষে (কাশফুল বন) প্রশাসনিক ভাবে কোন সুব্যবস্থা নয়া হয় না। কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এক শ্রেণী অসাধু সুবিধাভোগীরা পাকা সড়কের পাশে অবৈধ বিন্যা ঝাড় বাড়িয়ে চলেছে। এতে করে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের এই বিন্যাবনের কারণে ভয়ানক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

একদিকে রাস্তায় বিপদজনক বাঁক তার উপর এসব বাঁকের দু’ পাশে বিশাল বিন্যা ঝাড়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। মুষ্ঠিমেয় ব্যক্তিরা এসব বিন্যাবন রোপণ করে তা থেকে সামান্যই ফায়দা পেলেও ওই সব বিন্যা ঝাড়ে কারণে সৃষ্ট দূর্ঘটনায় ঝড়ে পড়ছে অমূল্য জীবন।

উপজেলার বিভিন্ন সড়কে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভবানীগঞ্জ থেকে কোশরহাট এবং ভবানীগঞ্জ থেকে তাহেরপুর রাস্তায় সবচেয়ে বিন্যা ঝাড় বেশি। এছাড়া ভবানীগঞ্জ থেকে মোহনগঞ্জ ও সইপাড়া হয়ে রাজশাহীর রাস্তায় বিন্যা ঝাড় রয়েছে। এসব সড়ক গুলো অতি গুরুত্বপূর্ন হলেও চলাচলের অসুবিধায় কেউ দেখার নেই। এসব রাস্তা দিয়ে হরদম চলাচল করছে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহন। সড়ক পথে যাতয়াতে সামনের কিছু দেখা যায় না এমন মারাত্মক বাঁকে একই ভাবে বিন্যা ঝাড় রোপন করার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা।

বালানগর গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুল ওয়াহেদ ও ব্যাটারী চালিত আটো চালাক আব্দুস সামাদ জানান, এসব বিন্যাবনের কোন বৈধতা নেই। সরকারি রাস্তার দু’ধার যে যেমন পারে দখল করে বিন্যাগাছের শাখা রোপণ করে রাখে। পরে বৃষ্টি নামলে ওই বিন্যাবনের শাখা বিশাল গাছে পরিনত হয়। এক সময় এসব বিন্যাগাছ পরিপক্ক হলে তা কেটে রোদে শুকিয়ে পানবরজের ছাউনির কাজে ব্যবহার করা হয়।
স্থানীয়দের মতে, এখন পানবরজের ছাউনীর জন্য খড় বাঁশসহ বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা যায়। এসব ভিন্ন জমিতে চাষ করা যায়। অথচ সামান্য লাভের আশায় কথিপয় স্বার্থন্বেষী মহল যুগ যুগ ধরে সরকারি রাস্তার দু’ধার দখল করে বিন্যাগাছ রোপণ করে দূর্ঘটনার আশংকা বাড়িয়ে তুলেছে।

বাস চালক ফজলু মিয়া ও সিএনজি চালক রেজাউল জানান, বিন্যাবনের কারণে গাড়ি চালাতে তাদের প্রচন্ড অসুবিধা হয়। ওই সময় রানিং গাড়ির হর্ন বাজালেও তা খুব একটা বুঝা যায় না। তখন উভয় গাড়ীর মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে প্রতিনিয়ত। এমনি ভাবে গত মাসে উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মোটর সাইকেল আরোহী উজ্জ্বল ভবানীগঞ্জ যাবার পথে দেউলিয়া স্লুইজগেট পার বাঁকে ন্যিারবন থাকায় সামনে ট্রাক না দেখতে পেরে সামনা সামনি পড়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে গুরুত্বর আহত হয়।

একই ভাবে গত জুন মাসে হামিরকুৎসা হাট থেকে বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে গোয়ালকান্দি এলাকার রাস্তার এক বাঁকে বিন্যাবনের কারণে মোটরসাইকেল আরোহীর সংঘর্ষ হয় চেউখালি গ্রামের কৃষক আনোয়ারের। পরে পথচারী ও পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ জুন আনোয়ার মারা যায়। শুধু আনোয়ার নয় এই উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার দু’পাশের বিন্যাবনের কারণে এমন দূর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।

বালানগর গ্রামের কলেজ শিক্ষক রেজাউল হক ও গোপালপুর মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা রেজাউল করিম জানান, বাগমারা- সইপাড়া রাস্তা উপজেলার মধ্যে গুরুত্বপুর্ণ রাস্তায় দেউলিয়া মোড় স্লইজ গেট পার এমন অবস্থা রয়েছে সামনে কোন গাড়ি আসলে মাথা বিগড়ে যায়। প্রতি নিয়তই এখানে ঘটে দুর্ঘটনা ঘটে। অথচ থানা ও উপজেলার এই গুরুত্বপুর্ণ সড়ক কেউ দেখার নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম বিষয়টি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্য সময়ের দরকরা বলে মন্তব্য করেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নাছিম আহমেদ জানান, বিন্যা ঝাড়ের কারণে পুলিশের টহলগাড়ী নিয়ে আমরাও সমস্যার সম্মুখিন হই। আমরাও চাই আঁকা বাঁকা রাস্তা ও ঝুঁকিপূর্ন মোড়ের দু’পাশের বিন্যাবন দ্রত পরিস্কার করা হোক।

স/শ