বাগমারায় চাঁদা না দেয়ায় রাস্তার শ্রমিকদের উপর হামলা, আহত ২৫

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় এলজিইডি’র রাস্তায় কাজ করার সময় স্থানীয় আ.লীগ নেতাকে না জানিয়ে ও চাঁদা না দেয়ায় কর্মরত শ্রমিকদের উপর ওই আ.লীগ নেতার নির্দেশে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলায় রাস্তায় কর্মরত ২৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছে বলে রাস্তার ঠিকাদার নাজমুল হোসেন জানিয়েছেন।

পরে খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

আহতদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম (২৮) ও ফরিদুল ইসলাম নামের দুই শ্রমিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন। আহত শ্রমিকদের বাড়ি নাটোর বলে জানা গেছে।

এদিকে অভিযুক্ত আ’লীগ নেতা তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঘটনার পর থেকেই রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে বলে উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন জানিয়েছেন। হামলার ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।

উপজেলা এলজিইডি’র অফিস সূত্রে জানা যায়, বাগমারা উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের খালিশপুর থেকে আত্রাই উপজেলার পাইকড়া পর্যন্ত এলজিইডি’র রাস্তার কার্পেটিং এর কাজ চলছিল। শনিবার বিকেলে স্থানীয় আ’লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজার কর্মী ইনতাজ আলীর ছেলে রুবেল হোসেন (৩৫) বালু তোলা ইঞ্জিনচালিত শ্যালোর গাড়ি (কাঁকড়া) নিয়ে কার্পেটিং এর কাজ চলা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ওই রাস্তায় কর্মরত শ্রমিকেরা রুবেল হোসেনকে দাঁড়ানোর অনুরোধ করলে তিনি শ্রমিকদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে রুবেল হোসেন বিষয়টি স্থানীয় আ’লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজাকে মুঠোফোনে জানান। পরে ওই আ.লীগ নেতা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের উপর হামলার নির্দেশ দেন। আ’লীগ নেতার হুকুমেই রুবেল হোসেন তার লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শ্রমিকদের উপর ঝাপিয়ে পড়েন। শ্রমিকেরা প্রাণ ভয়ে দিকবিদিক পালিয়ে যায় এবং সেখানে বাবুল হোসেন নামের এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে তারা হামলা চালিয়ে বাড়িঘরের দরজা ভেঙ্গে শ্রমিকদের বেধড়ক মারপিট শুরু করে। খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ওই ঘটনার পর থেকেই ঠিকাদার নাজমুল হোসেন রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন।

ঠিকাদার নাজমুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, রাস্তার কাজ শুরুর পরপরই তারা শ্রমিকদের কাছে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবি করতেন। আমার কাছে না এসে তারা শ্রমিকদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। চাঁদা না দেয়ায় শ্রমিকদের উপর এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ঠিকাদার নাজমুল হোসেন জানিয়েছেন। বিষয়টি জানার পরপরই স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক ঘটনার সাথে জড়িতদের শক্ত হাতে দমনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাগমারা থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম ও বাগমারা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম বলেন, সরকারি রাস্তায় কাজ করার সময় যারাই বাঁধা দিক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি। অপরদিকে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স/শা