বাগমারায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ: নেই প্রশাসনের উদ্যোগ

বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মত অসংখ্য চিমনি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার অধিকাংশ সরকারী নিয়ম নীতি উপক্ষা করে গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে একাধিক বার প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হলেও আইনের ফাঁক ফোক দিয়ে ইটভাটার কার্যক্রম চলছে।

ইটভাটাগুলোতে চলছে জ্বালানী হিসেবে কাঠ পোড়ানোর মহা উৎসব। এতে ইট প্রস্তুত ও ভাটা (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ লংঘন করে অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে লিগ্যাল নোটিশ করেছেন সুপ্রীম কোটের আইনজীবী জালাল উদ্দীন উজ্জল।

তিনি গত ২৬ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত স্বপ্রনোদিত হয়ে জনস্বার্থে প্রশাসনের ১১ জন কর্মকর্তাকে এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। তার পক্ষে বাগমারা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ১১ কর্মকর্তার লিগ্যাল নোটিশ পাঠান আইনজীবী মেজবাহুল ইসলাম আসিফ।

তিনি তার লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করেছেন, রাজশাহী জেলার মধ্যে অবস্থিত বাগমারা একটি বৃহৎ জন ঘনবসতি এলাকা এবং এই এলাকার অধিকাংশ লোকজন কৃষি নির্ভরশীল। এই এলাকায় বিভিন্ন ধরনের কৃষি উৎপাদনশীল ফসলের পাশাপাশি যেমন আম উৎপাদন ও আম বাগানের ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে। অত্র এলাকায় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এর বিধি-বিধান লংঘন করে পরিবেশগত ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই অসংখ্য অবৈধ ইটভাটা স্থাপনের মাধ্যমে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যা দিনের পর দিন অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে আবাদি উৎপাদনশীল উর্বর কৃষি জমি ব্যাপক হারে নষ্ট হচ্ছে। এলাকার সর্ব সাধারণ ইটভাটার কারণে তাদের সুস্থ জীবন যাপনে পরিবেশগত দূষনের মাধ্যমে নানা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ আইন দ্বারা নিষিদ্ধ এলাকার সীমারেখা যেমন ঃ স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাসপাতালসহ মানুষের চলাচলের প্রধান সড়কের পার্শ্বে উক্ত অবৈধ চিমনি ইটভাটাগুলো স্থাপনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ফলে অত্র এলাকার পরিবেশগত দূষণ, কৃষি জমি ধ্বংস, জন স্বাস্থ্যের ক্ষতি ও খাদ্য নিরাপত্তার হুমকি সহ বিশেষ করে আম বাগানসহ বিভিন্ন ধরনের ফলজ ও বনজ বৃক্ষাদির বাগান ধ্বংস হচ্ছে।

এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট আইনে প্রশাসন যাতে যথাযত ব্যবস্থা নিয়ে তার নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসনের কাছে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়।

উক্ত নোটিশে আরো উল্লেখ করেছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর কর্র্তক নির্মিত উপজেলা কিংবা ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক হতে কমপক্ষে ১/২ (অর্ধ) কিলোমিটার দুরত্বের মধ্যে ইট ভাটা নির্মাণ আইন রয়েছে। এছাড়া কৃষি জমি, পৌরসভা বা উপজেলা সদরের দুরত্ব রেখা নীয়ম নীতি উপেক্ষিত হচ্ছে। আইনজীবী জালাল উদ্দিন উজ্জল অবৈধ ইটভাট বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে জনস্বার্থে সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তরে পরিচালক, রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরে পরিচালক, বন বিভাগের পরিচালক, রাজশাহী জেলা জেল প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। জানাগেছে বাগমারায় ডামচিমনি দিয়ে অবৈধভাবে তৈরি করা হয়েছে ১৫ ভাটা। এ সকল ভাটা তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ফসলের জমি নষ্ট করে। অবৈধ এসব ডামচিমনি ভাটার বেশিরভাগই গড়ে উঠেছে শুভডাঙ্গা, নরদাশ ও গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নে।

এ বিষয়ে উপজেলা ইট ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীন বলেন, আমার বৈধভাবে ইট ভাটা পরিচালনা করছি তারপরও প্রশাসন আমাদের পিছু নেয়। কিন্তু অবৈধ ভাবে ডামচিমনি দিয়ে ভাটা তৈরি করে প্রশাসনের চোখকে ফাকি দিয়ে কিভাবে তারা ভাটা চালাচ্ছে এটা আমার বোধগম্য নয়।

এদিকে অবৈধ ভাবে নির্মিত ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান ইটভাটা মালিক সমিতির লোকজন।

স/অ