নাটোরে ভেজাল ও নিম্নমানের কাঁচাগোল্লা তৈরী হলে ব্যবস্থা: জেলা প্রশাসনের হুশিয়ারী

নিজস্ব প্রতিবেদক,নাটোর:

নাটোরের ঐতিহ্যবাহী কাঁচাগোল্লার সুনাম ধরে রাখতে কাঁচাগোল্লা তৈরী ও বাজারজাত করেন তাদের কাঁচাগোল্লার মান ও গুণাগুণ ঠিক রেখে তৈরীর নির্দেশনা দিয়েছেন নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন। যারা ভেজাল ও নিম্নমানের কাঁচাগোল্লা তৈরী ও বাজারজাত করে কাঁচাগোল্লার সুনাম নষ্ট করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার ঘোষনাও দেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালে নাটোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মানসম্মত কাঁচাগোল্লা তৈরী ও বাজারজাত করণে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই হুশিয়ারী দেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরি জলি, সিনিয়র সাংবাদিক রনেন রায়, নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জালাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, সিনিয়র সাংবাদিক মোক্তার হোসেন, জয়কালি বাড়ি মিস্টি দোকানদার দ্বারিক ভান্ডার , রবীন্দ্রনাথ কুন্ডু, আদি নিমতলা মিষ্টান্ন ভান্ডার রাজিব পাল, উজ্জল, শম্ভুকুন্ডু সহ অন্যন্যরা।
মতবিনিময় সভায় নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরি জলি বলেন, বেশির ভাগ কাঁচা গোল্লায় ময়দা এবং চিনি মেশানো হয়। এতে আসল কাঁচাগোল্লার স্বাদ নষ্ট  হয়ে যায়। ঐতিহ্যবাহী কাঁচাগোল্লার স্বাদ এবং সুনাম ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ীদের আন্তরিক হওয়া দরকার।
জয়কালি বাড়ি মিস্টি দোকানদার দ্বারিক ভান্ডার বলেন, জেলার কোন স্থানে নাটোরের ঐতিহ্যবাহি ১নম্বর কাঁচাগোল্লা বিক্রি হয়না। ভালমানের দুধ না পাওয়ার কারণে ছানা তৈরী করা সম্ভব হয়না। ভাল দুধ এবং ছানা পাওয়া গেলে এক নম্বর কাঁচাগোল্লা তৈরী করা সম্ভব।
আদি নিমতলা মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক রাজিব পাল বলেন, কাঁচা গোল্লা নাটোরের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সকল ব্যবসায়ী যদি সঠিক মানের কাঁচাগোল্লা তৈরী করে তাহলে নাটোরের ঐতিহ্যধরে রাখা সম্ভব। এছাড়া বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশনে হকাররা অতি নিম্নমানের কাঁচাগোল্লা বিক্রি করে। যার কারনে নাটোরের র্দুনাম ছড়িয়ে পড়ছে।
জয়কালীবাড়ি মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক প্রভাত কুমার বলেন, নাটোরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের আন্তরিক হওয়া ছাড়া উপায় নাই। ব্যবসায়ীরা একনম্বর কাঁচাগোল্লা তৈরী করলে সুনামটা ধরে রাখা সম্ভব। কারণ ভাল মানের কাঁচাগোল্লা তৈরী করলে মানুষ বেশি দামেও কিনতে ইচ্ছুক।
সভায় অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলাম বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে নাটোরের কাঁচাগোল্লার সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এই সুনাম ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কারিগর এবং ব্যবসায়ীদের সাথে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছি। প্রাথমিক মতবিনিয় শেষে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। আগামী দিনে যাতে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা ভাল মানের কাঁচাগোল্লা তৈরী করে বাজারজাত করে, সে নির্দেশনায় দেয়া হল তাদের। দরকার হলে যারা ভাল কাঁচাগোল্লা তৈরী করতে পারে, তাদের প্রশিক্ষক বানিয়ে প্রশিক্ষন দেয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বলেন, নাটোরের ঐতিহ্যবাহী কাঁচাগোল্লার গুণগত মান ঠিক করে ব্যবসায়ীদের বাজারজাত করতে হবে। কেউ যদি ভেজাল এবং স্বাদহীন কাঁচাগোল্লা বিক্রি করে আগামী দিনের তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স/শ