মঙ্গলবার , ৯ মে ২০১৭ | ২৮শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বাংলায় বিজেপি ও রামের উত্থান!

Paris
মে ৯, ২০১৭ ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বাংলায় রাম কখনো কোনো ঐতিহাসিক চরিত্র ছিলেন না, যেমনটা ভারতের উত্তর অংশের লোকেরা বিশ্বাস করে। এ বিষয়ে  উত্তর প্রদেশ ও বাংলার মানুষের বিশ্বাস ভিন্ন। উত্তর প্রদেশে রাম সূর্যের ন্যায় সত্য, কিন্তু বাংলায় তা নয়। এমনকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘কবি তব মনোভূমি রামের জন্মস্থান, অযোধ্যার চেয়ে সত্য।’

 

কিন্তু ঠাকুরের এলাকা বীরভূমসহ বাংলার অনেক এলাকায় এখন রাম নবমী ও হনুমান জয়ন্তী উদযাপন চোখে পড়ার মতো। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, এখানকার সামাজিক-রাজনৈতিক বয়ান পাল্টে যাচ্ছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এভাবে বলা হয়।

 

বক্তারা তাঁদের হিন্দু পরিচয় তুলে ধরার জন্য এসব আচার-অনুষ্ঠানকে ব্যবহার করে। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের চোখে রাম হচ্ছে ‘অন্যায় ও সন্ত্রাসে’র বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রতীক।

 

উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের পর একটা বিষয় চলে আসছে। দেখানো হচ্ছে, দেশপ্রেমের জন্য আছে হিন্দুত্ববাদ আর ধর্মনিরপেক্ষতা মানে হচ্ছে মুসলমানদের শান্ত রাখা। ১৯৯২ সালে হিন্দুধর্মের প্রতি একটা আবেগ দেখেছিল কলকাতা। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তখন বাবরি মসজিদ ভাঙার কাজ করছিল।

 

জিহাদি ইসলাম নিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণি হয় বিরক্ত, না হয় অনিরাপত্তায় ভুগছে। সরকার স্কুলের পাঠ্যবইয়ে ‘রামধনু’ শব্দটি বদলে ফেলেছে। তৃতীয় শ্রেণির বইয়ে আগে ছিল ‘রামধনু’। তা করা হয়েছে ‘রঙধনু’।

 

এটা একটা দৃশ্য। এর বিপরীত ব্যাপারও আছে। উপনির্বাচনগুলোর দিকে দেখলেই বোঝা যাবে। বিজেপি ক্রমাগতই দ্বিতীয় শীর্ষ দলে পরিণত হচ্ছে। নিজেদের অবস্থান থেকে পিছিয়ে পড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বামেরা।

 

বামেদের ভোট দ্রুত চলে আসছে বিজেপির দিকে। ২০১৬ সালে লোকসভা নির্বাচন এরই ইঙ্গিত দেয়। ক্রমেই ছোট হয়ে যাচ্ছে বামপন্থীদের অবস্থান। তরুণদেরও আকর্ষণ করতে পারছে না বামপন্থীরা। আইটি ম্যানেজার সৈকত মিত্র যেমন বললেন, ‘আমরা কংগ্রেস, সিপিএম ও তৃণমূলকে দেখেছি। এখন দেখতে চাই মোদিজি কেমন করেন।’

 

দলিতদের নিয়ে কাজ শুরু করেছে বিজেপি। বাংলায় ভিন্ন বার্তা দিতে চান বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। তাই তো সফরে গিয়ে নকশালবাড়িতে দরিদ্র পরিবারে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। কে বলবে, একসময় দলটি কেবলই উচ্চবর্ণের হিন্দুদের দল ছিল! তবে এখানেই সব শেষ নয়। বিজেপির মুখপাত্র সায়ান্তন দাস বলেছেন, ‘পিছিয়ে পড়া মুসলমানরা আমাদের লক্ষ্যের মধ্যে আছে।’

 

কলকাতায় বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে আলাপকালে সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ নিয়ে কথা বলেন অমিত শাহ। একদমই দেশি চিন্তাধারা। ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতন্ত্রবাদী সংবিধান পরিবর্তনের একটা ডাকও আছে সেখানে। হিন্দু সংহতির মতো দলগুলো ধর্মীয় মেরুকরণ থেকে রাজনৈতিক মেরুকরণের দিকে যেতে বিষয়গুলো নিয়ে নেয়। আর এ বিষয়গুলোই ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখার সাহস দেয়।

 

‘হিন্দু রাষ্ট্রে’ অন্য চিন্তার জন্য খুব কম জায়গায়ই আছে। কলকাতার একজন মুসলমান শিক্ষক বলেন, ‘প্রায়ই বলা হয়, মুসলমানরা যারা ভারত মাতাকে সমর্থন করে না, তারা যেন দেশ ছেড়ে চলে যায়। আমি ছাত্রদের জাতীয় সংগীত গাইতে বলি। কিন্তু কেউ কেউ বন্দে মাতরম গাইতে চায় না। এতে আমি জোর করতে পারি না।’

সূত্র: এনটিভি

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক