বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই সেঞ্চুরিই আমার বড় বিজ্ঞাপন : কিলার মিলার

২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর তারিখটি অন্য যে কারো জন্য হতে পারে স্বাভাবিক একটি দিন। তবে বাংলাদেশ দলের তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুটে ব্যাটসম্যান ডেভিড মিলার এ দিনটিকে ভুলবেন না সহজে।

দুজনের কারণটা দুরকম। মিলার সেদিন ব্যাটকে খাপছাড়া তরবারি বানিয়ে কচুকাটা করেছিলেন বাংলাদেশি বোলারদের। যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রহার সইতে হয়েছে সাইফউদ্দিনকেই। ফলে ম্যাচটি দুজনের মনেই দীর্ঘদিন ধরে থেকে যাওয়ারই কথা।

সেদিনের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাত্র ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন মিলার। যা এখনও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। এ সেঞ্চুরি করার পথে সাইফের করা ওভারের ১৯তম ওভারের প্রথম পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন মিলার। শেষ বলে কোনমতে রক্ষা পান সাইফ।

অথচ সেই ম্যাচে আগের তিন ওভারে হাশিম আমলা ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের উইকেটসহ মাত্র ২২ রান খরচ করেছিলেন সাইফ। কিন্তু কিলার মিলারের বিপক্ষে করা সেই এক ওভার তছনছ করে দেয় সবকিছু, ঝড় তুলে দেয় সাইফের মনের আকাশে।

প্রায় তিন বছর পর এসেও মিলার মানছেন, বাংলাদেশের বিপক্ষে করা সেই সেঞ্চুরিটিই তার ক্যারিয়ারের বড় বিজ্ঞাপন। বিশ্বব্যাপী নানান ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে বেড়ালেও, আন্তর্জাতিক ফরম্যাটে নিজের দ্রুততম সেঞ্চুরিটিকেই এগিয়ে রাখছেন তিনি।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন মিলার। সাইফের এক ওভারে ৩১ রান নেয়াসহ সবমিলিয়ে সেদিন ৩৬ বলে ৭ চার ও ৯ ছয়ের মারে ১০১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন মিলার।

সে ইনিংসের ব্যাপারে মিলারের মূল্যায়ন, ‘এই সেঞ্চুরিটিই আমার ক্যারিয়ারের বড় বিজ্ঞাপন। ক্যারিয়ারের পেছন দিকে তাকালে কিছু জিনিস সবসময় বিশেষ স্থান দখল করে থাকে। তার মধ্যে এটি একটি। যখন এমন কোন মুহূর্ত আসে তখন সেটাকে আপনি অবশ্যই উপভোগ করবেন।’

সেদিন মিলারের হাতে বেধড়ক পিটুনি খাওয়া তরুণ পেসার সাইফউদ্দিন এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পেস বোলিংয়ের অন্যতম প্রধান অস্ত্র। সাইফ মানেন, মিলারের বিপক্ষে করা সে ওভার তার ক্যারিয়ারে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করেছে।

মিলার নিজেও মনে করেন একজন তরুণ পেসারের জন্য এমন একটি ওভার বা ম্যাচ অনেক বড় শিক্ষণীয় ব্যাপার। তিনি বলেন, ‘কোন বোলারই এক ওভারে ৩১ রান খরচ করতে চায় না। সেই ওভারের কথা যদি বলি, সাইফউদ্দিন এরপর আরও পরিণত হবে। এটা তার মতো ইয়ংস্টারদের জন্য শেখার বড় সুযোগ।’

নিজের কিলার মিলার নামের ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘২০১৩ সালে আইপিএলে একটি সেঞ্চুরি করার পর থেকে এই নাম চলে এসেছে। আমি উপভোগ করি এটি। একজন খেলোয়াড় হিসেবে ভক্তদের দেয়া এমন ডাকনাম নিজের মধ্যেও একধরনের প্রভাব ফেলে। আমি এটিকে ইতিবাচক হিসেবেই নেই এবং কিলার হয়েই খেলতে পছন্দ করি।’

 

সুত্রঃ জাগো নিউজ