বাংলাদেশের প্রতি আমার আলাদা টান রয়েছে : ঋত্বিকা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

পশ্চিমবঙ্গের মালদাহর সেন বাড়ির মেয়ে ঋত্বিকা সেন। ছোটবেলা থেকেই অভিনয় করছেন তিনি। শিশুশিল্পী হিসেবে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন। ২০১২ সালে ‘১০০% লাভ’ সিনেমার মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্রে নাম লেখান তিনি। এরপরে রাজা চন্দর ‘চ্যালেঞ্জ-টু’ ও ২০১৪ সালে রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘বরবাদ’ সিনেমায় বনি সেনগুপ্তের বিপরীতে অভিনয় করে সকলের নজরে আসেন ঋত্বিকা। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ‘আরশিনগর’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ওপার বাংলার পাশাপাশি এপার বাংলাতেও রয়েছে তার দর্শকপ্রিয়তা।

‘বরবাদ’ সিনেমা খ্যাত এ অভিনেত্রী বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় কাজ করছেন। সিনেমাটি যৌথভাবে পরিচালনা করছেন বাংলাদেশের কামাল মো. কিবরিয়া লিপু ও ভারতের নেহাল দত্ত। বাংলাদেশের ভেনাস মাল্টিমিডিয়া ও ভারতের ভিশন এন্টারটেইনমেন্ট যৌথভাবে সিনেমাটি প্রযোজনা করছে। এতে ঋত্বিকার বিপরীতে অভিনয় করছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের চিত্রনায়ক শ্রাবণ খান।

আজ ৯ মার্চ থেকে ঢাকায় এ সিনেমার শুটিং শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিতে গতকাল ৮ মার্চ বাংলাদেশে আসেন ঋত্বিকা সেন। উত্তরার মন্দিরা শুটিং সেটে ঋত্বিকার সঙ্গে কথা হয় রাইজিংবিডির এ প্রতিবেদকের। আলাপচারিতার বিশেষ অংশ রাইজিংবিডি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

রাইজিংবিডি : প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছেন। এখানে এসে কেমন লাগছে?
ঋত্বিকা :
প্রথম এসেই ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। এখানকার পুরো বিষয়ই আমি এনজয় করছি। ওয়েলকামটা ভালো লেগেছে। আমার মনে হয় এখানকার লোকজন অনেক বেশি আন্তরিক। যেটা আমি খুব এনজয় করছি, আনন্দ পাচ্ছি। পুরো জার্নিটাই ভালো লাগছে। আজকে এখানে প্রথম শুটিং করছি। এখানে ইউনিটে যারা রয়েছেন তারাও খুব ভালো।

রাইজিংবিডি : বাংলাদেশে কোন বিষয়টি আপনার বেশি ভালো লেগেছে?
ঋত্বিকা :
এদেশের কালচারটা আমার ভালো লাগছে। এখানকার খাবার খুব বিখ্যাত। কালকে এসে খেয়েছি, এখনো খাচ্ছি। খাবারটা খুব এনজয় করছি। খাবারটা খুব রসিয়েই এনজয় করছি। কালকে রাতে আমি মাছ খেয়েছি। কালকের খাবারের স্বাদটা এখনো আমার জিভে লেগে রয়েছে।

 

রাইজিংবিডি : বাংলাদেশে কাজ করার ইচ্ছেটা কি আগে থেকেই ছিল?
ঋত্বিকা :
একদম। অনেকদিন আগে থেকেই এখানে কাজ করার ইচ্ছে ছিল। তাছাড়া বাংলাদেশে আসার ইচ্ছে অনেক দিন ধরেই ছিল। শুটিংয়ের জন্যও আসার কথা ছিল। কিন্তু আসা হয়নি। শেষ পর্যন্ত এবার আসা হলো। অনেকবার ভেবেছিলাম আসব কিন্তু শুটিং বাতিল হওয়ায় আসা হয়নি। এবারে ফাইনালি যাত্রাটা শুভ হয়েছে। যখন ইন্ডিয়া থেকে বের হলাম তখন ওখানে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি যাত্রা শুভ হয়। মিষ্টি একটা পরিবেশ ছিল।

রাইজিংবিডি : বাংলাদেশের সিনেমা দেখা হয় কি?
ঋত্বিকা :
সব ধরনের সিনেমা আমি দেখি। অন্যান্য দেশের সিনেমা দেখেই আমি উৎসাহিত হই। আমার পছন্দের কোনো শিল্পী নেই। তবে আমি সব ধরনের সিনেমা দেখতে পছন্দ করি। সিনেমা দেখতে ভালো লাগে। তিন ঘণ্টা সিনেমা দেখে আমরা বলে দেই ভালো লাগছে না খারাপ লাগছে। কিন্তু সেটা করতে কতটা কষ্ট পোহাতে হয় সেটা আমরাই বলতে পারি।

রাইজিংবিডি : যৌথ প্রযোজনা নয় শুধু বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করার ইচ্ছে আছে কি?
ঋত্বিকা :
এদেশের সিনেমায় কাজ করার খুবই ইচ্ছে আছে। আমার জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে দর্শকদের ভালোবাসা। এর জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ। যারা আমাকে সার্পোট করেছেন, যাদের জন্য আমি সিনেমায় কাজ করছি এবং কাজকে ভালোবাসি। দর্শকদের যে সাড়া পাচ্ছি এর ৯৫ ভাগ পাচ্ছি বাংলাদেশের দর্শক থেকে। এ জন্য বাংলাদেশের প্রতি আমার আলাদা টান রয়েছে। এখানকার দর্শক খুব ভালো। আমি দেখেছি এখানকার লোকজনের অদ্ভুত আন্তরিকতা রয়েছে। এখানকার লোকজনের সঙ্গে কাজ করে মন ভরে যাচ্ছে। আগামীতে সুযোগ পেলে অবশ্যই কাজ করব।

রাইজিংবিডি : যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‘গাদ্দার’-এ যুক্ত হলেন কীভাবে?
ঋত্বিকা :
প্রথমে নেহাল দা আমাকে ডাকেন। তিনি আমাকে প্রথমে গল্পটা শোনান। গল্পটা শুনেই আমি কাজটি করতে আগ্রহী হই। তাছাড়া দুই দেশের সিনেমা বলে একটু বেশি আগ্রহী ছিলাম। কারণ অনেকদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল দুই বাংলার সিনেমায় আমি কাজ করব।

রাইজিংবিডি : সহশিল্পী শ্রাবণ খানের সঙ্গে আপনার কাজের রসায়নটা কেমন?
ঋত্বিকা :
শ্রাবণ তো বন্ধুর মতো। শুটিং সেটে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ থাকে। শ্রাবণ খুব কিউট। মানুষ হিসেবেও ভালো। নেহাল দা, শ্রাবণ প্রত্যেকেই বন্ধুর মতো। আমাদের পরিচালক নেহাল দা কি চাইছেন সেটা খুব সহজে বোঝাতে পারেন। আর এটা বুঝতে পারা আমাদের সব থেকে বড় একটা ক্রেডিট। অনেক পরিচালক সেটা বোঝাতে পারেন না।

 

রাইজিংবিডি : ‘গাদ্দার’ সিনেমায় আপনাকে কেমন চরিত্রে দেখা যাবে?
ঋত্বিকা :
এখানে আমি একটা মিষ্টি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করছি। বলা যায় খুব শান্ত ও মিষ্টি মেয়ে রূপে দর্শক আমাকে পাবেন। এতে আমি দুটি চরিত্রে অভিনয় করছি। এখন আপাতত একটি চরিত্রের কথা বলছি। আর একটা চরিত্র খুব সারপ্রাইজিং। এ চরিত্রটা সম্পূর্ণ উল্টো। এ সিনেমায় মজাটা ডাবল চরিত্র এবং অভিনয় করার জায়গাটাও ডাবল।

রাইজিংবিডি : ‘গাদ্দার’ সিনেমা বাদে বর্তমানে আপনি আর কি কাজ করছেন?
ঋত্বিকা :
সামনে দুটো সিনেমার কাজ শুরু করব। দুটোই কলকাতার সিনেমা। এগুলোর নাম এখনই বলছি না। খুব শিগগিরই এসব সিনেমার কাজ শুরু হবে।

রাইজিংবিডি : সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার কোনো অ্যাকাউন্ট রয়েছি কি?
ঋত্বিকা :
ফেসবুকে আমার অনেকগুলো ফেক আইডি খোলা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় না কোনটি আমি। তাই ফেসবুক ইউজ করি না। এখন শুধু টুইটার ইউজ করি।

রাইজিংবিডি: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ঋত্বিকা :
রাইজিংবিডিকেও ধন্যবাদ।

সূত্র :রাইজিংবিডি