বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে নানা কর্মসূচি ইবি শিক্ষার্থীদের

ইবি প্রতিনিধি:
বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন, আমরণ অনশন ও গায়ে কেরোসিন ঢেলে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখে তারা। এসময় তারা মেইন গেট অবরোধ করে ২টার গাড়ি বন্ধ করে দেয়।

আন্দোলনকারীরা জানায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে বেতন, পরিবহন, হল, সেশন ও ভর্তি ফিসহ অন্যান্য ফি ৪ গুণ বৃদ্ধি করে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার করা হয়। এখন প্রতি বছর সাড়ে ৯ হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে। যা আগে ছিল ৩ হাজার। এসব কারনে আমরা দীর্ঘদিন ধরে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচী, প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচী পালন করেছি। এরপরেও প্রশাসন থেকে কোন আশ্বাস না পেয়ে আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে নেমেছি।

সকাল সাড়ে নয়টায় ডাইনা চত্বর থেকে মিছিল বের করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ১০টার দিকে প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে তারা। সেখানে কয়েক ঘন্টা অবস্থানের পর দুপুর ১ টার পর মেইন গেট অবরোধ করে তারা।

এসময় তারা বাবার রক্ত যদি সেই চুষতে হবে, প্রাইভেট না হয়ে পাবলিক কেন তবে?, ছাত্রের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন নয়, হৈ হৈ রৈ রৈ এত টাকা গেল কই, এক দফা এক দাবি বেতন ফি কমাতে হবে এসব স্লোগান দিতে থাকে। আন্দোলনের একপর্যায়ে ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ ও প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. আনিছুর রহমান ও সাবেক প্রক্টর প্রফেসর মাহবুবর রহমান উপস্থিত হন। আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তারা। এসময় আন্দোলনকারী এক ছাত্রী জ্ঞান হারালে তাৎক্ষণিক তাকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

এবিষয়ে ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, আগামীকাল (বুধবার) সকাল ১১টায় সকল বিভাগের সভাপতি ও সকল অনুষদের ডিনদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

এদিকে সকাল সাড়ে দশটা হতে পরমানু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের সামনে আমরণ অনশনে নামে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে প্রায় ৫ মাস আগে থেকে তারা অবস্থান কর্মসূচী, প্রশাসন বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করলেও অনুষদীয় ডিন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন আশ্বাস পাইনি বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।

পরে তারা দাবি আদায়ের জন্য দীর্ঘক্ষণ যাবত ডিনের কার্যালয় অবরোধ করে রেখে একপর্যায়ে ডিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন। এসময় অফিসে অবস্থানরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে আটকা পড়ে। আন্দোলনকারী ৫ বিভাগের শিক্ষার্থীরা সব ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে এ আমরন অনশনে নামে। সৈকত নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির বিষয়ে প্রো-ভিসি (ভারপ্রাপ্ত ভিসি) প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান বলেন, এটা একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। ফ্যাকাল্টি মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত একাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপিত হলে পরবর্তীতে আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিব।

স/শা