বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ‘উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার( ২০ মে )সকাল ১০ টায় এ  ওয়েবিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়েবিনারে বিভাগের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধায়নে বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে তাদের গবেষনার ফলাফল ভিডিও ডকুমেন্টারি ও পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি অনলাইনে মাইক্রোসফ্ট টিমস প্লাটফরর্মের মাধ্যমে স্ট্রিম ইয়ার্ডের সহায়তায় ফেসবুকে লাইভে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।

উক্ত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে যুক্ত ছিলেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের  ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোখলেছুর রহমান এবং বিশেষ অথিতি হিসাবে যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য প্রফেসর মো. শহিদুর রহমান ও রেজিস্ট্রার ড. মো. মহিউদ্দিন।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মো. ইলিয়াছ হোসেন।

অনুষ্ঠানটির প্রথম পর্বে ছিল আয়োজক ও সম্মানিত অতিথিবৃন্দের আলোচনা। দ্বিতীয় পর্বে ছিল অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থাপনা। শুরুতে বিভাগের সহকারি অধ্যাপক নাসরিন ইসলাম স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। তারপর বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. আতাউল গনি ওসমানি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও গুরুত্ব তুলে ধরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মোখলেছুর রহমান, বিশেষ অতিথি প্রফেসর মো. শহিদুর রহমান ও ড. মো. মহিউদ্দিন উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরেন এবং এসব ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তাদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোঃ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উত্তরবঙ্গসহ সারা বাংলাদেশের সর্বত্র শহর গ্রাম-গঞ্জে ছড়িযে ছিটিয়ে আছে।’ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হিসাবে মৃৎশিল্প, বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্য, তাঁত-বস্ত্র, মিষ্টি তৈরি, অলংকার ইত্যাদি কর্মকান্ডকে গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানটির দ্বিতীয় ও মূল পর্বে মোট সাতটি গবেষনার ফলাফল উপস্থাপন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রথমে বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. আতাউল গনি ওসমানি এর তত্ত্বাবধায়নে প্রাক্তন শিক্ষার্থী সরকার তানভির আহমেদ (তানিম) ভিডিও ডকুমেন্টারি উপস্থাপনার মাধ্যমে জয়পুরহাট জেলার মাহালী সম্প্রদায়ের হাতের তৈরি পণ্য ও দৈনন্দিন জীবনধারা তুলে ধরেন। এখানে মাহালী সম্প্রদায়ের উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জোর দাবি ওঠে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করার এবং তাদের জন্য একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার। বিভাগের সহকারি অধ্যাপক নাসরিন ইসলাম এর তত্ত্বাবধায়নে প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. সোহানুর রহমান আত্রাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পাল সম্প্রদায়ের মৃৎশিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে পাওযার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন। তৃতীয়ত, বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলাম এর তত্ত্বাবধায়নে প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. আহাদ হোসেন পাওয়ার পয়েন্ট পেজেন্টেশনের মাধ্যমে দূর্গাপুর ও বাগমারা উপজেলার কামারদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। প্রভাষক নাজনীন সুলতানার তত্ত্বাবধায়নে উত্তরবঙ্গের বস্ত্র হস্ত শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা শিরোনামে বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থী ফাহাদ আল আশিক থানাপাড়ার তাঁতশিল্প ও রেনুকা শারমিন বুটিক শিল্প সম্পর্কে তাদের পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সবশেষে বিভাগের প্রভাষক মিতু পারভিনের তত্ত্বাবধায়নে বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী পূর্বা শাহা শাহাজাদপুর উপজেলার তাঁত শিল্পের উৎপাদন পক্রিয়া, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট ও ভিডিও প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। এই পর্বে অর্থনীতি বিভাগের প্রত্যেক শিক্ষক তার সহকারি শিক্ষার্থীর পরিচয় ও গবেষণার বিষয়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানের শেষে বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থী মো. মিনহাজুল হাসনাত রাফির পরিচলনায় প্রভাষক নাজনীন সুলতানার তত্ত্বাবধায়নে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।

বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থী মো. সাফায়েত হোসেন এর সঞ্চালনায় প্রায় চার ঘন্টাব্যাপী এই ওয়েবিনারটির সমাপনী বক্তব্যে বিভাগের  কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মো. ইলিয়াছ হোসেন অনুষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ও উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ধন্যবাদ প্রদান করেন ও অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘোষনা করেন।

স/জে