বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজলাভবনে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে।বুধবার(১৭ মার্চ) দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ভবনে আলোচনাসভা,সঙ্গীত পরিবেশন, কবিতা আবৃত্তি, কেক কাটা ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে খাবার ও বস্ত্র বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এবং কেক কেটে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে বস্ত্র ও খাবার বিতরণ করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. মহিউদ্দীন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. মো. ফয়জার রহমান, সাংবাদিকতা বিভাগের কো-অর্ডিনেটর মো.শাতিল সিরাজ, প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সহকারী পরিচালক সিরাজুর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্ম বার্ষিকী  উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে  জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. মহিউদ্দীন  বলেন, ‘আজকের দিন আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ আজকের দিনের যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটা হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শততম জন্ম বার্ষিকী। এ বিষয়ে বলতে হলে কবিতার ছন্দে বলি-“ তুমি জন্মেছিলে বলেই জন্মেছিলো দেশ,মুজিব তোমার আরেক নাম স্বাধীন বাংলাদেশ।” তিনি যদি না জন্মগ্রহণ করতেন তাহলে এই স্বাধীনতা আমরা পেতাম না।এবং শেখ মুজিবর রহমান যতটুকু না রাজনীতিবিদ তার চাইতে বেশি ছিলেন তিনি মানবিক। তিনি পিতার গোয়াল থেকে সব ধান দরিদ্রদের মাঝে দূর্ভীক্ষে বিতরণ করেন।নিজ শরীরের জামা কাপড় পাগলদের খুলে দিয়ে দিতেন।নিজের অসহায় বন্ধুদের নিয়ে এক ঘরে এক বিছানায় দুই থেকে চারজন কষ্ট করে থাকতেন ইসলামিয়া কলেজে থাকতেন।মানুষের দুঃখে তিনি ব্যাথিত হতেন সুতরাং তিনি একজন মানব দরদী নেতা ছিলেন।তার রাজনৈতিক দিক বলে শেষ করা যাবে না।তিনি রাজনৈতিক কাজেও মহান ছিলেন।তিনি এদেশে না জন্মালে এই দেশ স্বাধীন হতো না।যার কারনে মুজিবের অপর নাম বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ বলতে যদি কিছু বোঝায় তা হলো শেখ মুজিবর রহমান।’

তিনি আরো বলেন, ‘বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় আজকের দিনটি খুব শ্রদ্ধাভরে পালন করছে।সকাল থেকেই শিশু দিবস উপলক্ষে ১০০ জন সুবিধা বঞ্চিত শিশুর মাঝে খাবার ও বস্ত্র বিতরণ করেছে।তাদেরকে মুজিবের আদর্শ সম্পর্কে বলা হয়েছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে,জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে স্বরণ করে কেক কাটা এবং ভার্চুয়াল আলোচনার মাধ্যমে সারাদিনব্যাপি শ্রদ্ধাভরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বরণ করছে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।’

প্রতিবেদকের এক প্রশ্নে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম,কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের কো-অর্ডিনেটর মো.শাতিল সিরাজ বলেন,বাংলাদেশ নামক যে স্বাধীন রাষ্ট্র আমরা পেয়েছি সেখানে আমাদের অর্জনটা অনেক অনেক বেশি,আমরা দেখতে পাচ্ছি আর্থ সামাজিক নানান সূচকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে।আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছি, মাথাপিছু আয় বেড়েছে,নাগরিকের সক্ষমতা বেড়েছে।এই স্বাধীন একটা রাষ্ট্র না পেলে এটা আমাদের সম্ভব ছিলো না।আমরা যদি এখনো পাকিস্তানের কাছে বাধা পড়ে থাকতাম তাহলে আমরাও পশ্চাত্য জনগোষ্ঠী, পরাধীন জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত হতাম,আমাদের সম্ভাবনার বিকাশ ঘটার কোন সুযোগই থাকতো না। এসব কিছু থেকে আমাদের মুক্ত করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। আর তিনি যদি সঠিক ভাবে নেতৃত্ব না দিতেন,যদি স্বাধীন একটা রাষ্ট্রের স্বপ্ন না দেখতেন,এবং সেই স্বপ্নর জন্য এই জাতি বা মানুষকে উজ্জীবিত না করতেন,লড়াই সংগ্রামের জন্য উদ্ধুদ্ধ না করতেন তাহলে এই রাষ্ট্রটা আমরা পেতাম না।

তিনি আরো বলেন, ‘আজকে আমার যে অনুভূতি বাংলাদেশ নামক একটি জাতি রাষ্ট্র আমরা পেয়েছি খুব গর্বের সাথে বাংলাদেশের পতাকা উড়াতে পারছি।নিজেদের পরিচয় দিতে পারছি এবং সারা বিশ্ব এখন নানান সূচকের অগ্রগতির কারণে বাংলাদেশের প্রশংসা করছে।এসব কিছুর জন্য আমরা প্রতি মূহুর্তে আমরা জাতির পিতাকে স্বরণ করি এবং তার অবদান স্বীকার করে থাকি ও তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। আজকের দিনে মনে করি জাতির পিতার শিক্ষাটাকে কাজে লাগিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করি, তবে সেটাই হবে জাতির পিতার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো।’

এদিকে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোখলেসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনলাইন আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন -বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এম.সাইদুর রহমান খান। বিশেষঅতিথি হিসেবে ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এম.ওসমান গনি তালুকদার,ভারপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য প্রফেসর শহিদুর রহমান, রেজিস্ট্রারড. মো. মহিউদ্দীনসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, কো-অর্ডিনেটর, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জীবন কর্মের উপর আলোকপাত করে বক্তব্য প্রদান করেন। প্রফেসর ড. ফয়জার রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সফলতা ও জনপ্রিয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে প্রফেসর ড. এম. সাইদুর রহমান খান তার বক্তব্যে বলেন “বঙ্গবন্ধুর মত নেতা আমরা পেয়েছিলাম বলে আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি।’’

আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধুর স্মরণে সঙ্গীত পরিবেশন, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তি করা হয়।

স/রি