বরখাস্ত পৌর মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে আরও দুই মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র আব্বাস আলীর নামে আরও দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় শরিয়ত আলী ও সাইদুর রহমান নামের দুই ব্যক্তি বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন (সিএমএম) আমলী আদালতে মামলা দুটি দায়ের করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম জানান, মানহানির অভিযোগ এনে বরখাস্তকৃত পৌর মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে তারা এই মামলা করেছেন। মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন (সিএমএম) আমলী আদালতের বিচারক মো. মাসুদুজ্জামান তদন্তের জন্য কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তদন্ত শেষে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করতে ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার মামলায় বরখাস্ত মেয়র আব্বাস আলীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে তাঁর জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। এ দিনই শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সম্প্রতি আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে। এরপর বিচারের জন্য মামলাটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে এসেছে। এ মামলার ধার্য্য তারিখ আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি। তবে তার আগেই বৃহস্পতিবার আদালতে নথি উপস্থাপন করে আসামির জামিন আবেদন করা হয়েছিল।

আসামি আব্বাস আলীর পক্ষে জামিন আবেদন করেছিলেন তাঁর আইনজীবী পারভেজ তৌফিক জাহিদী। শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা ছাড়াও বাদীপক্ষের আইনজীবী আসলাম সরকার ও মুসাব্বিরুল ইসলাম জামিনের বিরোধীতা করেছিলেন। এই জামিন শুনানির জন্য আসামিকে আদালতে নেওয়া হয়নি বলেও জানান আইনজীবী ইসমত আরা।

উল্লেখ্য, আব্বাস আলী পর পর দুবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে মেয়র হন। ছিলেন আওয়ামী লীগের পদেও। গত নভেম্বরে তাঁর দুটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল করলে ‘পাপ হবে’- এমন মন্তব্য করতে শোনা যায়। আরেকটিতে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সম্পর্কে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন আব্বাস আলী। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সিটি করপোরেশনের একজন কাউন্সিলর। এরপর ১ ডিসেম্বর ঢাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে গ্রেপ্তার হন আব্বাস।

এরই মধ্যে তাঁকে আওয়ামী লীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আব্বাস আলীকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে তিন দিনের রিমান্ডেও নিয়েছিল পুলিশ। ৯ ডিসেম্বর রিমান্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগের তিনটি মামলায় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন আব্বাস। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা হলো। এ নিয়ে তার মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়ালো পাঁচটি।

এএইচ/এস