বন্ধকৃত পাটকল আধুনিকায়ন করে চালুসহ ৫ দফা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:


সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন বন্ধকৃত পাট, সুতা ও বস্তকল আধুনিকায়ন করে অবিলম্বে চালুসহ ৫ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ব পাটশিল্পের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ।

সংসাদ সম্মেলন থেকে আগামি ১৮ নভেম্বর বিকেল চারটা থেকে পাঁচটা সারাদেশের পাটশিল্প এলাকায় শান্তিপূর্ণ গণপদযাত্রার ঘোষণা দেওয়া হয়। 

দাবিগুলো হলো- বন্ধকৃত ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল আধুনিকায়ন করে চালু, উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদন ব্যয় কমানো ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলে লাভজনক শিল্পে পরিণত করতে হবে। কর্মহীন ৫১ হাজার শ্রমিককে স্বপদে কাজে ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন বন্ধকৃত পাট, সুতা ও বস্তকাল আধুনিকায়ন করে অবিলম্বে চালু করতে হবে (এই দুর্যোগকালীন সময়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক কর্মসংস্থান হবে)।

এছাড়া সরকারি, অধিগ্রহণকৃত হস্তান্তরিত ও ব্যক্তিামালিকানাধীন পাটকল শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে। বস্তকল শ্রমিকদের জন্য ঘোষতি মজুরি কার্যকর করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে শ্রম আইনের ‍পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশ সংবিধান, জাতীয় শ্রমনীতি এবং আইএলও কনভেশন ৮৭ ও ৯৮ অনসারে অবাধ ট্রেড ইউনিয় অধিকার নিশ্চিত করাসহ শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে।



এসময় উপস্থিত ছিলেন, পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সহিদুল্লাহ চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন রেজা জেনু, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন রাজশাহী জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল করিম অপু প্রমুখ।

সাংবাদিক সম্মেলন থেকে জানানো হয়- বাংলাদেশের পাটশিল্প শ্রমিক-কর্মচারীরা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশা-পাশি গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঐতিহ্যবাহী ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় মুক্তিযুদ্ধের সুফল জাতীয়করণ হিসেবে প্রাপ্ত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের শেষ চিহৃটুকু মুছে ফেলা হচ্ছে।

তারা আরও জানায়, জাতিসংঘের ৭৪ তম অধিবেশনে প্লাস্টিক পণ্যের উপর নির্ভরশীতা কমিয়ে প্রাকৃতিক বন্ত্ত ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। তার আলোকে পরিবেশ বিপর্যয় কমাতে উন্নত দেশগুলোতে ২০২২ সাল থেকে পাট ও তুলা জাতীয় পণ্যের ব্যবহার কয়েকগুন বেড়ে যাবে। যার ফলে বিশ্বব্যাপি পাটজাত পন্যের বিপুল চাহিদার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সারা পৃথিবীতে পাটপণ্যের চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশ ও ভারত পাট ও পাট পণ্য উৎপাদনকারী প্রধানতম দুটি দেশ।

এই মহুর্তে ভারতে নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে রফতানি করার মত সামর্থ্য নেই। বাংলাদেশের পক্ষও বিদ্যমান মেশিনারিজ প্রযুক্ত ব্যবহার করে কারখানা আধুনিকায়ন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালনা করা জরুরি। তা করা হলে উন্নতমান সম্পন্ন পাটপণ্যের উৎপাদন একই শ্রমশক্তি দ্বারা তিনগুন বৃদ্ধি করা সম্ভব। বিজেএমসির অধীনস্থ মিলগুলো বন্ধ হওয়ার পর ব্যক্তিমালিকানাধীন পাটকলই বাংলাদেশের একমাত্র পাটখাত। তবে ১৬ হাজার তাঁতের মধ্যে চালু আছে মাত্র ৬ হাজার তাঁত। আর বন্ধ ৬৪টি মিল। যার ফলে ক্রেতাদের মানসম্পন্ন পণ্যের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।  তাই সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন বন্ধকৃত পাট, সুতা ও বস্তকাল আধুনিকায়ন করে প্রয়োজন।

স/আ