বছরে লক্ষ শিশুর জীবন যায় যুদ্ধে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

যুদ্ধের কারণে প্রতিবছর প্রাণ যাচ্ছে লক্ষাধিক শিশুর। কখনও গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় শিশুর শরীর। আবার কখনও ক্ষুধা-পিপাসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ইয়েমেন যার জলজ্যান্ত উদাহরণ।

কোনো এলাকায় সশস্ত্র সংঘাত শুরু হলে সবচেয়ে বিপাকে পড়ে সেই এলাকার নারী আর তাদের শিশুসন্তানেরা। শুক্রবার আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের এক রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধের ফলে ৫ লাখ ৫ হাজার শিশু (এক থেকে ৫ বছর বয়সী) মারা গেছে।

এসব শিশুর বেশিরভাগই মারা গেছে ক্ষুধা ও অপুষ্টির শিকার হয়ে। যুদ্ধে হাসপাতাল ও অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে স্বাস্থ্য সুবিধাবঞ্চিত হয়ে, সময়মতো পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার কারণেও মারা গেছে বহু শিশু।

সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, যুদ্ধের কারণে সরাসরি হুমকির মুখে থাকে শিশুরা। শিশুদের হত্যা করা হয়, জিম্মি করা হয়, জোরপূর্বক যুদ্ধে নিয়োগ করা হয়। এ ছাড়া যৌন সহিংসতা বা অঙ্গ-প্রতঙ্গ কেটে নেয়ার জন্য অপহরণ করা হয়।

সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী হেলি থর্নিং স্মিথ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বর্তমানে প্রায় প্রতি পাঁচজন শিশুর একজনই সংঘাত অঞ্চলে বাস করছে। এই সংখ্যা গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।’

এদিকে গত বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে পার্কল্যান্ডের মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস স্কুল হামলার পর থেকে বছরের শেষ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০-এর বেশি শিশু প্রাণ হারিয়েছে। মার্কিন সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিডিসির বরাত দিয়ে শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ না কেউ বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারায়। সিডিসির মতে, ২০১৭ সালে বন্দুকের গুলিতে আত্মহত্যা করে প্রায় ২৪ হাজার মার্কিনি।

২০১৫ সালে আমেরিকায় বন্দুক হামলায় ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। আহত হয় প্রায় ২৩ হাজার। শুটিং ট্র্যাকার আর্কাইভের তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। মোট ঘটনা ঘটেছে ৩৫৩টি। এতে মোট নিহতের সংখ্যা ১২,২২৩ জন। আর সব মিলিয়ে আহত হয়েছেন ২৪,৭২২ জন।

এর আগে ২০১৭-এর অক্টোবরে লাস ভেগাসে এক উন্মুক্ত কনসার্টে যে অভাবিত হত্যাকাণ্ড ঘটে, সেটি ছিল সে বছরের ২৭৫ দিনে ২৭৩তম গণখুনের ঘটনা। ৬৪ বছর বয়স্ক এক আপাত-সুস্থ ব্যক্তির এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে নিহত হয় ৫৮ জন। আহত ৫০০ ছাড়িয়ে যায়।

লাস ভেগাসের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বন্দুক সহিংসতার ঘটনা ঘটে ৪০ হাজার। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মতে, (সিডিসি) এ সংখ্যা আগের বছর তথা ২০১৬ সালের চেয়ে ১ হাজার বেশি এবং সিডিসির ৫০ বছরের তথ্য-উপাত্তের মধ্যে সর্বোচ্চ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেসব ঘটনার পুরোটাই মানুষের সামনে আসে না। শুধু কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোনো জমায়েতে হামলা হলেই তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

জরিপকারী সংস্থা পলিফ্যাক্টের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ১৯৬৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বন্দুক বা পিস্তলের গুলিতে আমেরিকায় ১৪ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন।