বগুড়ায় হাত বদলেই দাম বেড়ে যায় সবজির

গুড়ার হাট বাজাগুলো রকমারি শীত সবজিতে সেজে উঠতে শুরু করেছে। নানা স্বাদের সবজিগুলো বাজারে কেনাবেচাও বেশি জমে উঠেছে। কেনাবেচা হলেও হাত বদলেই বাড়ছে সবজির দাম। পাইকারি হাটের চেয়ে খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে ২০ টাকা আবার কখনও দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। সবজির আমদানি হাটে দিগুণ হওয়ায় দামও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে সবজির অনেকটা কমে গেছে। তবে দামের মিল থাকছে না পাইকারি ও খুচরা বাজারে সাথে।

জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ পাইকারি হাট মহাস্থানে শীতকালীন সবজির আমদানী বেড়েছে গত মাসের চেয়ে কয়েকগুন বেশি। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে কমে এসেছে সবজির দাম। তবে মহাস্থান হাট থেকে কেনা সবজি রাজধানী ঢাকাসহ বগুড়া শহরের পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বগুড়া জেলায় গোটা বছর ধরে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। শুধু শীতকালীন সবজি হয় আড়াই লাখ মেট্রিকটন। এসব সবজি বিক্রির সবচেয়ে বড় হাট জেলার মহাস্থান। চাষীর কাছে থেকে পাইকারি ক্রেতা, এরপর আবার বাজারের আড়তদার থেকে খুচরা বিক্রেতার কাছে থেকে সাধারণ ভোক্তার কাছে হাত বদলেই দাম বেড়ে যাচ্ছে।

বগুড়ার মহাস্থান হাটের সবজি বিক্রেতা শাজাহান মন্ডল, আশরাফ আলী, বজলুর রহমান, নাফেস জানান, ১ মাস আগে ফুলকপি ছিল ২৫ থেকে ৩ হাজার টাকা মন, তারপরের সপ্তাহে ৮শ থেকে ১২শ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৩৫০ থেকে ৪শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ১৫ দিন আগে মূলার দাম ছিল ৩০০ থেকে ৪শ টাকা মন, এখন তা ১৫০ টাকা থেকে ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাতাকপি ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৫ থেকে ১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই সবজির দাম আরো কমবে বলেও তারা জানান।

হাটে আসা বিক্রেতারা জানান, আমদানী বেশি হওয়ায় সবজির দাম কমে গেছে। বগুড়ার মহাস্থান হাটে আলু পাকরী ১৬০০ টাকা মন আর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। সাদা আলু (হল্যান্ড) ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা মন, পাতা পিয়াজ ৬০০ টাকা মন আর কেজি হিসেবে ১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। গোটা পিয়াজ ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা মন আর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭ টাকা। মুলার মন ১২০ টাকা আর কেজি হিসেবে তিনটাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি হাটে ফুলকপি ৫টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রকার ভেদে ৮ থেকে ১০ টাকা করে বিক্রি হচ্চে। এদিকে জেলা শহরের ফতেহ আলী কাঁচা বাজারে পাকরী আলু ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাতা পিয়াজ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, গোটা পিয়াজ ৫০ তেকে ৬০ টাকা করে। মুলা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা কেজি। ফুলকপি ২০ টাকা কেজি। পাতা কপি ৩০ টাকা পিচ।

চট্রগ্রামের সবজির পাইকার (ক্রেতা) মো: ইব্রাহিম জানান, বগুড়া থেকে যাতায়াত ভাড়া, পণ্যের ঘাটতি, আপলোড, আনলোড সবমিলিয়ে দাম বেড়ে যায়।

পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানান, যাতায়াত ভাড়া, হাটবাজারের খাজনা, সবজি বস্তায় ভরানো, বাছাই, ট্রাকে বা যানবাহনে উঠানো সবমিলিয়ে প্রতিকেজিতে দাম বেড়ে যাচ্ছে। মহাস্থান থেকে রাজাবাজার হয়ে ফতেহ আলী বাজারসহ অন্যান্য বাজারে সবজির দাম প্রতি কেজিতে বাড়ছে ৫ থেকে ১০ টাকা আবার কখনও দ্বিগুন।

মহাস্থান হাট ইজারাদার মোশারফ হোসেন জানান, কাঁচামালের জন্য বিখ্যাত এই হাটে যথেষ্ঠ সবজির আমদানী রয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষীরা সবজি নিয়ে আসছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় অর্ধশত ট্রাকে যাচ্ছে এসব সবজি। এখানে খাজনা ছাড়া অতিরিক্ত কোন অর্থ নেয়া হয় না।

বগুড়া রাজাবাজার আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ জানান, পাইকারী হাট থেকে পন্য ক্রয় করে নিয়ে আসতে খাজনা, পরিনবহন, মালামাল তোলা ও নামানো মিলে খরচ বেড়ে যায়। দাম বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় দাম নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন