বগুড়ায় ছুরিকাঘাতে চিকিৎসকের মৃত্যু, ৬ দাবিতে সড়ক অবরোধ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

বগুড়ায় ছুরিকাহত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক মেহরাজ হোসেন ফাহিম (২৮) মারা গেছেন। রবিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে শজিমেকের ২৫তম ব্যাচের ছাত্র মেহরাজ হোসেন ফাহিমের মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।তারা রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতালের সামনে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে মহাসড়ক অবরোধ হয়ে পড়লে উভয় পাশে শত শত পরিবহন আটকা পড়ে। সেখানে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে স্লোগান দেন।

পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অর্ঘ্য রায় ছয় দফা দাবি পেশ করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো পূরণ না হলে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা সব ধরনের ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন করে আন্দোলন শুরু করবেন বলে জানান তিনি। ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ শেষে তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যান।

মেডিক্যাল কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী ও থানা পুলিশ জানায়, ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যার পর শজিমেক হাসপাতালের ২ নম্বর গেটের সামনে ঝাল-মুড়ি বিক্রেতা ফরিদ ব্যাপারীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় ইন্টার্ন চিকিৎসক ফাহিম রহমানের। এ সময় ফরিদের ছেলে শাকিল আহম্মেদ পেঁয়াজ কাটার ছুরি দিয়ে ফাহিমের পেটে আঘাত করেন। এ ঘটনার পর ওই দিন রাতেই পুলিশ ফরিদ ও শাকিলকে গ্রেপ্তার করে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে শজিমেক হাসপাতালের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন অনিবন্ধিত সব দোকান বন্ধ করা। দোকানিদের ট্রেড লাইসেন্স ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করার পর সেখানে ব্যবসার অনুমতি প্রদান, ওই গেট সংলগ্ন নতুন রাস্তার মোড়ে নিয়মিত পুলিশ টহলের ব্যবস্থা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সার্বক্ষণিক পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, কলেজের প্রবেশপথগুলোতে ২৪ ঘণ্টা আনসার মোতায়েন করে কলেজ চত্বরে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা। এ ছাড়াও ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন নতুন রাস্তার মোড়ে, লেডিস হোস্টেলের সামনে, ফিরিঙ্গির মোড় ও ভার্সেটাইল মোড়ে সিসিটিভি লাগানো, ক্যাম্পাসের অন্ধকার এলাকা আলোকিত করা এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডা. ফাহিম হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।

যোগাযোগ করা হলে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। এসব দাবির মধ্যে কিছু কলেজ প্রশাসন এবং কিছু পুলিশ প্রশাসনকে বাস্তবায়ন করতে হবে। কলেজ অংশের দাবিগুলো দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে। শিক্ষার্থীরা অন্য যেসব দাবি করেছে তা নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

সূত্র: কালের কণ্ঠ