বগুড়ায় করোনা ও উপসর্গে মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ীসহ তিনজনের মৃত্যু

বগুড়ায় কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস)–এ আক্রান্ত আরও দুজন মারা গেছেন। এর মধ্যে একজন মুক্তিযোদ্ধা বাড়িতে এবং অন্যজন ব্যবসায়ী। এ ছাড়া কোভিডের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন নওগাঁর এক ব্যবসায়ী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত একটা থেকে ও আজ শুক্রবার সকালের মধ্যে তাঁদের মৃত্যু হয়।

বগুড়ার বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রাত একটায় মারা গেছেন একজন রোগী। তাঁর নাম ইমতিয়াজ উদ্দিন (৬০)। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর বাসা বগুড়া শহরের খান্দার এলাকায়।

টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ও হাসপাতালের সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা (এইও) আবদুর রহিম  কোভিডে একজন রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কোভিডের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ওই রোগী টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। নমুনা সংগ্রহ করে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হলে সেখান থেকে আসা প্রতিবেদনে তিনি বৃহস্পতিবার কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হন। শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় অবস্থার অবনতি ঘটলে রাত একটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁর লাশ হাসপাতাল চত্বরে জানাজা শেষে দাফনের ব্যবস্থা করে।

অন্যদিকে কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) সংক্রমিত হয়ে আজ শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর নাম আনোয়ারুল ইসলাম (৬৫)। তাঁর বাসা বগুড়ার শেরপুর শহরের থানা রোডের অলিপুর নতুনপাড়া এলাকায়। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী।

লাশ দাফনে নিয়োজিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ও পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ারুল ইসলাম কোভিডের উপসর্গ দেওয়ায় তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় ১৪ জুলাই তিনি কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হন। বাড়িতে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় আজ ভোরে তিনি মারা যান।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে গার্ড অব অনার শেষে এই মুক্তিযোদ্ধাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি চলছে।

উপসর্গে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আজ ভোরের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এক রোগী। তিনি (৬২) নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন কাপড় ব্যবসায়ী।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদের দেওয়া তথ্যমতে, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও কাশিসহ কোভিডের উপসর্গ নিয়ে ওই রোগী বৃহস্পতিবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে মেডিকেল কলেজের আর-টি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। কোভিড পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার আগেই আজ ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁর লাশ সৎকারের জন্য নওগাঁর মহাদেবপুরে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কোভিড পজিটিভ শনাক্ত দুজন ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়।

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৮০ জন। কোভিডে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭৫ জনের।

প্রথম আলো