বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী বউ মেলায় নারীদের ঢল

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

বগুড়ার শেরপুরে প্রতিবছর বারুণী মেলা শেষে ‘বউ মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের গাড়ীদহ নামক স্থানে করতোয়া নদীর পশ্চিম কোল ঘেঁষে এই মেলা বসে। মেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই নারী। এখানে কোনো পুরুষ আসতে পারেন না। তাই বিভিন্ন বয়সী নারীরা প্রাণভরে মেলায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিনেছেন প্রসাধনীসহ নানা পণ্য। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই মেলা। কয়েক যুগ ধরে এই অঞ্চলের নারীদের জন্য মেলাটির আয়োজন হয়ে আসছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল মাঠজুড়ে মেলা বসে। মেলায় স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের দোকান। এক পাশে চলছে হুন্ডা ও নাগরদোলা খেলা। নারীরা দল বেঁধে আবার এলোমেলোভাবে দোকানে দোকানে ঘুরছেন। জিনিসপত্র পছন্দ করছেন। দরদাম করে পছন্দের জিনিসটি কিনছেন। আবার অনেকেই ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে নানা ধরনের ভাজাপোড়া দোকানে যান। সন্তানদের আবদার পূরণে সেগুলো দোকানে বসে বা পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে খেতেও দেখা যায়। নিমাই চন্দ্রের স্ত্রী কল্পনা ঘোষ তার বোন হিরা, ছেলে আকাশ ও মেয়ে নূপুরকে নিয়ে বউ মেলায় এসেছেন।

তিনি জানান, মেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, কসমেটিকস, হাতপাখা, কাঠের সামগ্রী, মিষ্টান্ন সামগ্রী কিনেছেন। ছেলে-মেয়েকে হোন্ডা খেলা দেখিয়েছেন। নাগরদোলায় চড়ে ওরা ব্যাপক আনন্দ করেছে।

মেলায় আসা সালমা, সুমাইয়া আক্তার, মুন্নী আক্তারসহ একাধিক নারী জানান, বাড়ির কাছে মেলা হওয়ায় সকালে এক দফা এসেছি। বিকেলে আরেক দফা মেলায় এসেছি। অনেক কিছু খেয়েছি। মেলা থেকে কিছু সাংসারিক জিনিসপত্র কেনা হয়েছে। পাশাপাশি সন্তানদের জন্য নানা ধরনের খেলনা কিনেছি। বাদ যায়নি মিষ্টান্ন সামগ্রী কেনা। বউ মেলাটি তাদেরকে ভীষণ আনন্দ দিয়েছে বলেও জানান এসব নারী।

মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য আনিছুর রহমান জানান, প্রতিবছর চৈত্রের বারুণী তিথির দ্বিতীয় দিনে এখানে বউ মেলার আয়োজন করা হয়। তবে এবার তিথি অনুযায়ী মেলা হয়নি। রোজার কারণে সেটি করা সম্ভব হয়নি। তাই রোজার ঈদের পরপরই বৈশাখে মাসে এসে ঐতিহ্যবাহী মেলাটি হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বউ মেলায় এসে বিভিন্ন বয়সী নারীরা নানা ধরনের জিনিসপত্র কিনেছেন। এ ছাড়া এবার মেলা জাঁকজমকভাবে হওয়ায় সময়সীমা আরো দুই-এক দিন বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সূত্র; কালের কণ্ঠ