সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় নিস শহরে বাস্তিল দিবসের উৎসবে জড়ো হওয়া জনতার ওপর হামলাকারী ট্রাক চালকের পরিচয় পুলিশ এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি।
পুলিশসূত্রে প্রথমিকভাবে বলা হচ্ছে, ওই চালক তিউনিসিয়ান বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক। হামলার ঘটনার পর পুলিশ ট্রাকে পাওয়া কাগজপত্র থেকে তার এ পরিচয় সনাক্ত করে।
স্থানীয়ভাবে তার নাম মোহাম্মদ ল্যউইজ-বুলেল। ৩১ বছর বয়সী এ ব্যক্তি পুলিশের নজরদারিতে না থাকলেও আগে তার সঙ্গে জিহাদি গ্রুপগুলোর সম্পৃক্ততা ছিল।
ব্যক্তিগত জীবনে বুলেল ছিলেন বিবাহিত এবং ৩ ছেলেমেয়ের বাবা। থাকতেন নিস শহরেই। ডেলিভারি ট্রাক ড্রাইভার ছিলেন তিনি।
পুলিশ শুক্রবার নিস রেলওয়ে স্টেশনের কাছেই তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। একটি খবরে বলা হয়েছে, ট্রাকেই পাওয়া গেছে চালকের লাইসেন্স, ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফোন।
ছোটখাট অপরাধ এবং সহিংসতার জন্য পুলিশ তাকে আগে থেকেই চিনত। কিন্তু জঙ্গিদের ওপর নজরদারির তালিকায় তার নাম ছিল না।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বাস্তিল দিবস উদযাপন করতে বহু মানুষ নিসের ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী বিখ্যাত প্রমেনেদ দেজাঙ্গলে চত্বরে জড়ো হয়েছিল। রাত ১১টার দিকে সেই ভিড়ের মধ্যে দিয়ে ২৫ টনি ওই ট্রাক প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা এগিয়ে যায়।
একটি খবরে বলা হয়েছে, এ হামলার দুইদিন আগে নিস এর পশ্চিমের এক শহরের একটি রেন্টাল ফার্ম থেকে ট্রাকটি ভাড়া করেছিলেন হামলাকারী। ট্রাকে পাওয়া কাগজপত্রগুলো ভাড়া সংক্রান্ত ছিল।
ফ্রান্সের নিউজ ওয়েবসাইট নিস-ম্যাতার খবরে বলা হয়েছে, সহিংসতায় জড়িত থাকার কারণে ২০১২ সালে শহরের উত্তরাঞ্চলের বাড়িতে বুলেলের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেখানকার অধিবাসীরা বলেছেন, বুলেল একা থাকতেন। তার সঙ্গে কথা বললে তিনি কোনও উত্তর করতেন না।
জনতার ওপর ট্রাক চালানোর সময় তার হাতে পিস্তল থাকলেও গাড়িটিতে পাওয়া অন্যান্য অস্ত্র ছিল নকল। এতে করে জিহাদি গ্রুপগুলো থেকে তিনি কতটা মদদ পেয়েছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অনেকেই ২০১৪ সালে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-আদনানির অডিও বার্তার সঙ্গে এ ট্রাক হামলার ঘটনার যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছেন।
ওই বার্তায় আদনানি যে কোনও পন্থায় তার অনুসারীদেরকে হামলা চালানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “আপনারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে না পারলে গুলি করুন, নাহলে নিজেই কিছু একটা ব্যবস্থা করুন… তাদের ওপর গাড়ি চালিয়ে দিন।”
২০১২ সালে তুলুজে মোহাম্মদ মেহরা থেকে শুরু করে ফ্রান্সের বেশিরভাগ জিহাদি হামলাকারীই ছোটখাটো অপরাধ করা থেকে পরবর্তীতে জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকেছে। নিসের এই হামলাকারীও সেই একই পথ অনুসরণ করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: বাংলা নিউজ