ফেব্রুয়ারীতে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জে নির্যাতনের শিকার ২৮ নারী-শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগরী ও জেলার ৯টি থানা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও জেলার ৪টি উপজেলায় ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২৮ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ১৩টি ও শিশু নির্যাতিত হয় ১৫ জন। এর মধ্যে রাজশাহীতে ৯ জন নারী ও ৯ শিশু এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪ জন নারী ও ৬টি শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাজশাহীর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’ এর ‘রিসার্চ এন্ড ডকুমেন্টেশন সেল’ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১ ফেব্রুয়ারি বাগমারায় অধ্যক্ষের জুতাপেটায় এক ছাত্র লোকলজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে, ৪ ফেব্রুয়ারি পুঠিয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক এক প্রতিবন্ধী কিশোরী (১৭) কে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠে, ৫ ফেব্রুয়ারি বাগমারায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নারীসহ আহত হন ৩ জন। ৯ ফেব্রুয়ারি পুঠিয়ায শিশুর সামনে মায়ের গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় এক দুর্বৃত্ত, ১৭ ফেব্রুয়ারি ১০ বছরের এক শিশু বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ১৯ ফেব্রুয়ারি তানোরে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পড়তে বসতে বলায় মায়ের উপর অভিমান করে আত্মহত্যা করে, ২৪ ফেব্রুয়ারি বাঘায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি পুঠিয়ায় বিচার না পেয়ে ক্ষোভে লজ্জায় এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করে।
তবে পবা এবং বাঘায় প্রশাসন এবং এনজিও কর্মীদের সহায়তায় বাল্যবিবাহ বন্ধের মতো ২টি ইতিবাচক ঘটনার খবর প্রকাশিত হয়। যাতে প্রতীয়মান হয় যে, প্রশাসন, এনজিও প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজ যদি এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সমাজ থেকে অনেকাংশ কমে যাবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে জেলায় ৯টি নারী নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে মহানগরীতে ৩টি এবং মহানগরীর বাইরে ৬টি নির্যাতনের ঘটনা। বাগমারায় ৫টি ও পুঠিয়ায় ১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার মধ্যে হত্যার চেষ্টা ৫টি, ধর্ষণ ২টি, আত্মহত্যা ১টি ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে ১টি। এছাড়া জেলায় ৯টি শিশু নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে মহানগরীতে ১টি এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সংঘটিত হয়েছে ৮টি। এর মধ্যে বাঘায় ৪টি, বাগমারায় ২টি ও পুঠিয়ায় ২টি শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার মধ্যে শিশু হত্যার ঘটনা ঘটে হত্যার চেষ্টা ২টি, ধর্ষণ ৩টি, অপহরণ ১টি, আত্মহত্যার চেষ্টা ২টি ও অন্যান্য ১টি ঘটনা ঘটে।

এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও চারটি থানায় ফেব্রুয়ারিতে ৪টি নারী ও ৬ শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৯ ফেব্রুয়ারি হারিয়ে যাওয়া ৫ জন শিশুকে পুলিশ উদ্ধার করে। শিশুর অভিভাবক থানায় জিডি করলে অভিযানে নামেন পুলিশ। একপর্যায়ে পৌর এলাকার ভুতপুকুর থেকে কয়েকজন শিশুসহ আইসক্রিম বিক্রেতাকে আটক করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে এ জেলায় ৪টি নারী নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ১টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। এছাড়া সদরের বাইরে ভোলাহাটে ১টি হত্যা, শিবগঞ্জ উপজেলায় ২টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। জেলায় ফেব্রুয়ারীতে শিশু নির্যাতনের ৬টি ঘটনার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ৫টি পাচারের ঘটনা ঘটে এবং শিবগঞ্জে ১টি অপহরণের ঘটনা ঘটে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

স/শা