ফিলিস্তিনের সাথে জামালদের অগ্নিপরীক্ষা আজ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

অপেক্ষার পালা শেষ। আজ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের অ্যাওয়ে ম্যাচে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিন পরস্পরের মুখোমুখি হচ্ছে। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১২টায় দুদলের ম্যাচটি কুয়েতের জাভেদ আল আহমাদ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শুরু হবে। বাছাই পর্বে ‘আই’ গ্রুপে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিন দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। দুদলেরই অর্জন এক পয়েন্ট করে।

অ্যাওয়ে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭-০ গোলে হারের পর হোম ম্যাচে লেবাননের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেন জামাল ভূঁইয়ারা। অন্যদিকে লেবাননের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করার পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরেছেন ফিলিস্তিনিরা। আজ দুদলের লক্ষ্য থাকবে পয়েন্ট হাতছাড়া না করার। সর্বশেষ ম্যাচে লেবাননের বিপক্ষে যে সুন্দর ফুটবলের প্রদর্শনীর পসরা সাজিয়েছিল বাংলাদেশ, ফিলিস্তিনের বিপক্ষেও সেই ছন্দ ধরে রাখতে কুয়েতের মাটিতে লড়াইয়ে নামবেন জামালরা।

শক্তি-সামর্থ্যরে দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে ফিলিস্তিন দল। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে তাদের অবস্থান ৯৭তম। বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৩তম। র‌্যাংকিংয়েই পরিষ্কার বোঝা যায় দুদলের শক্তির ফারাক কত। শারীরিক দিক দিয়ে অনেক শক্তিশালী ফিলিস্তিন। গত বছর কুয়েতের মাঠে খেলেছে দলটি। এ ছাড়া গত জানুয়ারিতে কাতারে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বেও খেলেছে।

এশিয়ান কাপেই নিজেদের শক্তি দেখিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করার পর হংকংকে ৩-০ গোলে হারিয়ে নকআউট পর্বে উঠে চমক দেয় ফিলিস্তিন। পরে কাতারের বিপক্ষে লড়াই জমিয়ে শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে হেরেছে তারা। এমন একটি দলের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচটি যে বাংলাদেশের জন্য কঠিন পরীক্ষা হতে যাচ্ছে, সেটি নির্দ্বিধায় বলাই যায়।

তবে এর আগে লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে অনুপ্রেরণা পাচ্ছে বাংলাদেশ। কেননা, শক্তিমত্তায় অনেক এগিয়ে থাকা লেবাননের বিপক্ষে মাঠে নামেন লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। লেবাননের মতো ফিলিস্তিনকেও ঠেকাতে কৌশল আঁটছে বাংলাদেশ। প্রধান কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা জানিয়েছেন, ফিলিস্তিন দল কতটা শক্তিশালী সেটি জানেন তিনি। গত এশিয়ান কাপে দুর্দান্ত খেলেছে তারা। তাদের হারানো কঠিন হবে। তবে লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে। সেই ছন্দ ধরে রাখতেই মাঠে নামবেন কোচ কাবরেরার শিষ্যরা।

ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ভরসা হলো দলীয় ঐক্য। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে খেলার জন্য মানসিকভাবে চাঙা ফুটবলাররা। ধারণা করা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের আক্রমণভাগ বনাম বাংলাদেশের রক্ষণভাগের মধ্যে লড়াই জমে উঠবে। তবে দলীয় ঐক্যবদ্ধ পারফরম্যান্সে ফিলিস্তিনকে হতাশ করতে চান জামালরা। রক্ষণভাগ সামলানোর পাশাপাশি আক্রমণভাগে সুযোগ পেলে গোল করার চেষ্টায় থাকবেন ফুটবলাররা। সৌদি আরবে ক্যাম্প গড়ে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার পর দারুণ একটা দলীয় কম্বিনেশন তৈরি হয়েছে। সেটি কাজে লাগিয়েই সফল হতে চায় বাংলাদেশ। এ ছাড়া কুয়েতে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও মাঠে গিয়ে জামালদের সমর্থন জোগাবেনÑ এটিও ইতিবাচক দিক।

ফিলিস্তিনের বিপক্ষে অতীত ইতিহাস অতটা উজ্জ্বল নয় বাংলাদেশের। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে দুদল পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দুদলের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। তবে এর পর ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হেরেই চলেছে বাংলাদেশ। পাঁচবারের সাক্ষাতে প্রতিটিতেই হারের তিতকুটে স্বাদ পান লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। সর্বশেষ ২০২১ সালে তিন জাতির ন্যাশন কাপে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে খেলেছিলেন জামালরা। এ ম্যাচে ফিলিস্তিন ২-০ গোলে জয় পায়। তবে এবার বাংলাদেশের ইতিহাস বদলে দেওয়ার পালা।