ফতুল্লায় যুবকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারল মাদক ব্যবসায়ীরা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সুমন ওরফে তোতলা সুমন নামে এক যুবককে মাদক ব্যবসায়ীরা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে শুক্রবার রাত ১০টায় ফতুল্লার পশ্চিম মাসদাইর এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

শনিবার ভোরে অগ্নিদগ্ধ সুমন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত সুমন ফতুল্লার পশ্চিম মাসদাইর এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে।

নিহতের ছোট বোন রিতা আক্তার বলেন, সুমন একসময় গার্মেন্টসে কাজ করত। তার স্ত্রী শিমু ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাদের ৭ বছরের আরেকটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

সুমন এখন গার্মেন্টের জুটের ব্যবসা করে। মৃত্যুর আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কারা জড়িত তাদের নাম সুমন ভাই আমাকে বলে গেছেন। আমি সেই কথা মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড করেছি।

আমাদের পাশের বাড়ির আশরাফ আলীর ছেলে বিপ্লব এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার ঘরে মাদক ব্যবসা চলে। এক সপ্তাহের কথা বলে সুমনের কাছ থেকে বিপ্লব ৭০ হাজার টাকা ধার নেয়। সেই টাকা দেই দিচ্ছি করে সুমনকে ঘুরাতে থাকে বিপ্লব। এছাড়া সোহেল মণ্ডলের কাছে সুমন টাকা পায়।

তিনি আরও জানান, মৃত্যুর সময় সুমন বলেছে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে সুমনকে ডেকে নিয়ে যায় বিপ্লব। এরপর তার স্ত্রী শায়লা বেগম, সোহেল মণ্ডল ও খানকার মোড় এলাকার মাসুদ আলী মিলে সুমনকে ধরে রাখে এবং বিপ্লব তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ সময় সুমন চিৎকার করলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এসে পানি ঢেলে আগুন নেভায়। খবর পেয়ে আমরা বাসা থেকে দৌড়ে গিয়ে সুমনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই।

স্থানীয়রা জানান, সুমন, বিপ্লব, তার স্ত্রী শায়লা, সোহেল মণ্ডল ও মাসুদ পশ্চিম মাসদাইর এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। মাদক ব্যবসার পাওনা টাকা নিয়েই এ বর্বর ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সময় তারা মাদক ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে মারামারিও করেছে।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের জানান, বিপ্লবের বিরুদ্ধে ৫টি ও সুমনের বিরুদ্ধে ৪টি মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সুমনের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিপ্লব তার স্ত্রী শায়লাসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।