‘প্রয়োজনে তিতাসের ৫০ শতাংশকে স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করা হবে’

একে তো ৫০ বছরের পুরনো গ্যাস পাইপলাইন। তার ওপর বিতরণ সংস্থাগুলোর অপেশাদার মনোভাব আর গাফিলতিতেই বারবার দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রী। তিতাস জানিয়েছে, শিগগিরই শুরু হবে পুরনো পাইপলাইন পরিবর্তনের কাজ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলছেন, অধিকতর তদন্তে নেমেছে সরকার। প্রয়োজনে গ্যাস বিতরণ সংস্থাগুলোর মোট জনবলের ৫০ শতাংশকেই স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করা হবে।

রাজধানী ঢাকা; বিশ্বের অন্যতম এই মেগাসিটিতে প্রায় ২৮ লাখের বেশি সংযোগ রয়েছে পাইপ লাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে দৈনন্দিন গৃহস্থালির জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য।

পাইপ লাইনের জটিলতায় যেমন গ্যাসের স্বল্প চাপের সমস্যা থাকে, তেমনি লাইনে লিকেজের কারণে হুটহাট ঘটছে অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সবশেষ নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনাও তারই বড় দৃষ্টান্ত।

রাজধানীতে আবাসিক খাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার শুরু হয় ১৯৬৮ সালে। ৭৫ পরবর্তী সময়ে ব্যাপক হারে সংযোগ বাড়তে থাকে ঢাকা মহানগরীতে। তিতাসের হিসেব বলছে- বিপুল পরিমাণ চাহিদার বিপরীতে বাড়ানো হয়নি পাইপ লাইনের সক্ষমতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরনো ও অবৈধ দু’প্রকার পাইপ লাইনই ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রাণঘাতী।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, তিতাসের কার্যক্রমে যথেষ্ট অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনা রয়েছে। নতুন লাইন না লাগালে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

তিতাস বলছে, টেকসই ঝুঁকি নিরসনে বিতরণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে পুরনো পাইপ লাইন বদলে নতুন করে পাইপ স্থাপনে ১৪’শ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হবে শিগগিরই। ১৪৩ টি ব্লকে ভাগ করে বসানো হবে ৪’শ কিলোমিটার নতুন পাইপ।

তিতাস গ্যাস জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী আবদুল ওয়াহাব বলেন, ঘনবসতি এলাকায় সর্বনিম্ন দুই ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তবে, এতো সব কারণের মধ্যেও তিতাসের গাফিলতি ও অপেশাদার মনোভাবকেই বড় কারণ হিসেবে দেখছেন খোদ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, কাজটা শুরু হলে যত পুরনো লাইন আছে, সেগুলো আমরা সারাতে পারবো। আমার বিভাগীয় গাফিলতি তো আছেই।

পাইপ লাইন প্রতিস্থাপনের কাজের পাশাপাশি বছর জুড়েই চলবে শুদ্ধি অভিযান। প্রয়োজেনে জড়িতদের স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করার হুমকিও দেন নসরুল হামিদ।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আরো বলেন, যারা এরকম অবৈধ কাজে জড়িত আমরা ব্যবস্থা নিয়ে নেব। এদেরকে কোন সুযোগ দেয়া হবে না। তিতাসের ৫০ শতাংশ লোক বের করে দিতে হলে তাও বের করে দেব।

অবৈধ সংযোগ উচ্ছেদের পাশাপাশি জ্বালানি খাতের পরিসেবায় স্বচ্ছতা আনতে জনগণের সাথে সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

 

সূত্রঃ সময়