প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা তোলপাড় তানোর

তানোর প্রতিনিধি :

রাজশাহীর তানোর পৌরসভা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়( আমশো) এর প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম মন্টুর বিরুদ্ধে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা করেছেন।

চলতি মাসের ৮ মে সোমবার রাজশাহী বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত -১ মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার আসামী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের বাড়ি আমশো মথুরাপুর গ্রামে, সে মৃত এবার তুল্লা সরদারের পুত্র। এমন চাঁদাবাজির মামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে, সেই সাথে উঠেছে সমালোচনার ঝড়

জানা গেছে, তানোর পৌর সদর আমশো গ্রামে পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিগত ২০০৩ সাল থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকুরী করেন মামলার বাদি আমশোগ্রামের মৃত চাঁন প্রামানিকের পুত্র হারুন অর রশিদ। স্কুলটি প্রথমে নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত এমপিও ছিল। গত ২০২২ সালের জুলাই মাসে উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন বা এমপিও পায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মামলার বাদির কাগজ বাদ রেখে এমপিও অনুমোদনের জন্য আসিরুদ্দিনের  প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আসামীসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেন।
মামলার বাদি সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর বিনা বেতনে পাঠদান করে আসছি। সরকার উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন দেয়। কিন্তু বেতনের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র মাধ্যমিক অফিসে জমা দিতে হয়। আমার ছাড়া শিক্ষক আসিরুদ্দিনের  কাগজপত্র আসামী গোপনে জমা দেন। আমি অন্য মারফতে বিষয়টি জানতে পারি। গত মাসের ১৩ এপ্রিল স্কুলের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষক কে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কারন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাব জানিয়ে দেয় ১০ লাখ টাকা পেলে কাজ হবে তাছাড়া হবে না।  আমি বিভিন্ন ভাবে অনুরোধ করার পরও টাকা ছাড়া কোন কাজ করবে না। নিরুপায় হয়ে  আদালতে মামলা করি। এডভোকেট রায়হানের মাধ্যমে আদালতে এজহার দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে মামলাটি রেকর্ড করেছেন। টাকা চাওয়ার রেকর্ড সংযুক্ত আছে  বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
একাধিক শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা মানে পুরো প্রতিষ্ঠানের বদনাম। হারুন দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বিনা বেতনে পাঠদান দিয়ে আসছে। আর এমপিও হল বেতনের জন্য ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে এটা অমানুবিক। হারুনের স্ত্রী  দীর্ঘ দিন ধরে প্যারালাইসিসে ভুগছেন। মানবেতর জীবন যাপন করছে এমনকি রান্নাবাড়াও করতে হয় হারুনকে। শিক্ষক সমাজ যদি এমন হয় তাহলে জাতি সমাজ কোথাই যাবে। এসব দূর্নীতি চাঁদাবাজ শিক্ষক দের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। তাহলে অন্য শিক্ষক রা এমন কর্মকান্ডে জড়িত হতে সাহস পাবে না।
মামলার আসামী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন,  বেতনের অনুমোদন করতে টাকা লাগে এটা সবাই জানে। সে ভাবেই তাকে বলা হয়েছিল,১০ লাখ টাকা চাওয়া হয়নি। রেকর্ড আছে  আপনি ১০ লাখ টাকা চেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা চেয়েছি, তাই বলে আদালতে মামলা করতে হবে এটা কোন ধরনের কথা। এটাতো প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট ছাড়া কিছুই না। মামলা করেছে আদালতে জবাব দেওয়া হবে।
ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল বাসার সুজন বলেন, মামলার বিষয়ে শুনেছি। আগামী বৃহস্পতিবার এসব বিষয় নিয়ে স্কুলে বসা হবে এবং সমাধানের চেষ্টা করা হবে।