‘প্রদর্শন অযোগ্য’ চলচ্চিত্র ছেড়ে দেওয়া হলো ইউটিউবে

প্রদর্শন অযোগ্য চলচ্চিত্র ছাড়া হলো সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে। নির্মাণ শুরুর প্রায় ৭ বছর পর চলচ্চিত্রটি সেন্সর বোর্ডে সেন্সর সনদের জন্য জমা দেওয়া হয়। সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা চলচ্চিত্রটি দেখে প্রদর্শনের অযোগ্য ঘোষণা করেন। এরপর ছবিটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেন এর নির্মাতা রুবেল আনুশ।

এরপর চলচ্চিত্রটিকে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টিকে সেন্সর বোর্ডের সদস্য অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস মনে করছেন, ‘এমন কাজ দেশীয় আইনকে উপেক্ষা করা।’  এতে যে ভালগারিজম রয়েছে, তাতে করে ডিজিটাইল আইনে মামলাও হতে পারে।

২০১৪ সালে রুবেল আনুশ শুরু করেছিলেন ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’। ছবির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিমলা ও মামুন। ছবিটির শুটিং চলাকালেই নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রযোজক-নির্মাতা, নির্মাতা-অভিনেত্রীর দ্বন্দ্বের কারণে গত ছয় বছরে আলোর মুখ দেখেনি ছবিটি।

ছবিটি সমাজে খারাপ বার্তা দেবে এমন আশঙ্কা চিত্রনায়িকা সিমলারও রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আমার অংশের গল্পটুকু জানি। এর বাইরে আর কিছু জানি না। আমার চরিত্রটি একজন মধ্যবয়স্ক নারীর। যে অসম প্রেমে আসক্ত হয়ে ব্যক্তিজীবনে নানা ঝামেলায় জড়ায়। আমার মনে হয়, এটুকু নিয়ে সেন্সরের মাথাব্যথা নেই। হয়তো অন্য কিছু আছে, যেটা সমাজের জন্য খারাপ বার্তা দেবে।’

তিনি বলেন, ছবিটি ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ হিসেবে প্রথম জমা পড়েছিল। বোর্ড সদস্যরা কিছু কর্তন দিয়েছিলেন। যত দূর জানি, পরিচালক বোর্ডের কথা না মেনে উল্টো নাম পরিবর্তন করে ‘প্রেমকাহন’ নামে ফের জমা দেন। সেন্সর বোর্ড আবার ছবিটি দেখে প্রদর্শনের অযোগ্য ঘোষণা করে।’

শুরুতে ছবিটির নাম ছিল ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’। তখন সেন্সর বোর্ড ছবিটির অনেকখানি কর্তন করতে বলে। পরিচালক আংশিক কর্তন করে নাম বদলে ছবি জমা দেন। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি। অশ্লীলতা ও আরো কিছু কারণ দেখিয়ে দ্বিতীয়বারেও ছবিটি আটকে দেয় সেন্সর বোর্ড। সেন্সর বোর্ডের আপত্তিতে ক্ষুব্ধ নির্মাতা রুবেল আনুশ। তিনি ঠিক করেন বিকল্প উপায়ে দর্শকের কাছে পৌঁছানোর, ‘আমি আর আপিল করব না। নতুন করে কর্তন করেও জমা দেব না। হলে যেহেতু মুক্তি দিতে পারব না, আমাকে বিকল্প উপায় দেখতে হবে।’

এর পরেই ইউটিউবে ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়। সেখানে ছবির একটু অংশকে নকল বলে দাবি করেছেন। ইতালিয়ান অভিনেত্রীর মনিকা বেলুচের ‘মালিনা/ Malena’ চলচ্চিত্র থেকে অসম প্রেম ও যৌনতার অংশ অনুকরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘যেহেতু নির্মাতা প্রথমে আইনের পথে গিয়েছেন। সেহেতু আইনত ভুল-ত্রুটি থাকলে সেটা সংশোধন করে নিতে পারতেন, এমন নয় যে সুযোগ নেই। কিন্তু তিনি আইন এড়িয়ে বিকল্প পথে গিয়ে ছবিটি ইউটিউবে রিলিজ করলেন। এটা তো আইন ভঙ্গ।’

ছবিটি কেন সেন্সর সার্টিফিকেট পায়নি?

এ বিষয়ে সেন্সর বোর্ডের সদস্য অরুণা বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এটি আসলে কোনো চলচ্চিত্র নয়, এটা অখাদ্য। সিনেমার একটা ধারাবাহিকতা থাকে। এটির কোনো ধারাবাহিকতা নেই। গল্প অসংলগ্ন। অহেতুক ভালগারিদম, এমন একটি কন্টেন্ট হয়েছে যেটা আসলে চলচ্চিত্র হিসেবে সেন্সর সার্টিফিকেট দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ