প্রথম হিজাবি আইনজীবী হিসেবে ব্রিটেনের কুইন্স কাউন্সিলে নিয়োগ পেলেন যে নারী

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নারী সুলতানা তাভাদার প্রথম হিজাবি নারী যিনি ফৌজদারি আইনজীবী হিসেবে কুইন্স কাউন্সিল পদে নিয়োগ পেয়েছেন। ইংল্যান্ডে একজন আইনজীবী সর্বোচ্চ এ পদেই থাকতে পারেন। গত মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মেইল।

ডেইলি মেইলকে সুলতানা আশা প্রকাশ করে বলেন, এটা খুবই অস্বাভাবিক অভিজ্ঞতা।

এটুকু পথ পাড়ি দিতে তাকে অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে হয়েছে।  তার সাফল্য কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী থেকে আসা অন্য নারী আইনজীবীদের অনুপ্রেরণা ও আত্মবিশ্বাস দেবে।

তিনি আরো বলেন, ‘তাছাড়া আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে প্রথম হিজাবি আইনজীবী হিসেবে বারে নিযুক্ত হয়েছি। সমাজের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সমাবেশের প্রতিনিধিত্ব করা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। আমার এ কৃতিত্ব অন্যান্য হিজাবি তরুণীদের তাদের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করবে। ’

সুলতানা জানান, কুইন্স কাউন্সিলে তার নিয়োগ মোটেও সহজ ছিল না। কাউন্সিলে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংখ্যালঘু ৫৭৫ দায়িত্ব পালন করেন। এদের মধ্যে মাত্র দুইজন হিজাবি নারী রয়েছেন। যাদের মধ্যে তিনিই প্রথম ফৌজদারি আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

তিনি জানান, আইনজীবী দায়িত্ব পালনের শুরুতে অন্যরা প্রায়ই তাকে প্রশ্ন করত যে তিনি কোনো মামলায় এসেছেন কিনা। কারণ তিনি হিজাব পরা ছিলেন। অথচ কেউ তাকে আইনজীবী কিনা তা জিজ্ঞাসা করত না। মানুষের আপনি কে আপনি কি আপনি এ কাজের জন্য প্রস্তুত কিনা তা নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্ন কাজ করে। নিজের ক্যারিয়ারে এ ধরনের অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখী হয়েছেন বলে জানান তিনি।

সুলতানা ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে মানবাধিকার বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এর আগে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

ফ্রান্সে নারী আইনজীবীদের ওপর হিজাব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে সুলতানা এর প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে নানা উদ্যোগের নেতৃত্ব দেন। তার মতে ফ্রান্সের এ ধরনের সিদ্ধান্ত সত্যিই দুঃখজনক। শুধু তাই নয়, তা এক ধরনের বৈষম্য এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার মতো। ফ্রান্সের এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ লিঙ্গ, জাতি ও ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যের সমান। এর মানে এটা অনেক অধিকারের লঙ্ঘন। আমি যখন এ ধরনের আনন্দঘন অবস্থানে থাকি, তখন অন্য দিকে যা ঘটছে তার জন্য আমার খুবই দুঃখ বোধ হয়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ